বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন আহত হয়। শনিবার সকাল ৯টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সন্ধ্যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে কমিটি। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে চমেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- মাহফুজুল হক, নাইমুল ইসলাম ও আকিব হোসেন। পরে তাদের চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে আকিব শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী, আর মাহফুজ ও নাইমুল ইসলাম সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
চমেকের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় জরুরি কাউন্সিলের সভা করে কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ ছিল। খোলার পর এমন ঘটনা দুঃখজনক। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কলেজ বন্ধ থাকবে।’
পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘শুক্রবার রাতের তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েক দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রুপ। এতে তিনজন আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক জানান, চমেক কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত তিনজনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর বিকেলে জরুরি একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ঘটনা তদন্তে ড. মতিউর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সংঘর্ষে জড়ানো দুটি গ্রুপের একটি সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী এবং অপর গ্রুপটি প্রয়াত সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্ট্রার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
এর আগে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেডিকেলের প্রধান ছাত্রাবাসে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠে অপর পক্ষের অনুসারীর বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে কলেজের সামনে ফুটপাতে অন্য পক্ষের একজনকে মারধর করা হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিকে দুইপক্ষই ক্যাম্পাসে অবস্থান করায় অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।