গণকবরে ২৪ মরদেহ দাফন, অপমৃত্যু মামলা

0
423

বাংলা খবর ডেস্ক:
সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৪ জনের গণকবরে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া পাঁচ মরদেহ শনাক্ত করতে সক্ষম হওয়ায় আত্মীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বরগুনা সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জানাজা সম্পন্ন হয়।

বরগুনার ডিসি হাবিবুর রহমান জানান, গণকবরে দাফনের আগে মরদেহের ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শনাক্তের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে কবর বুঝিয়ে দেয়া হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, সুগন্ধা নদীতে লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডে আহত ৮১ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪৬ জনের চিকিৎসা চলছে। ১৬ জনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, অগ্নিকাণ্ডে আহতদের মধ্যে ২১ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ৪ জনকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন ১৫ জনের চিকিৎসা চলছে। দুই জনকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আর একজনের মৃত্যু হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন ধরে। পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় লঞ্চটি ভেড়ানো হয়। রাতের আঁধারে নিজেরাই ঝাঁপিয়ে পড়ে যাঁরা প্রাণ বাঁচিয়েছেন তাঁদের বেশির ভাগই আহত ও দগ্ধ হয়েছেন। ভোররাতে স্থানীয় বাসিন্দারা নৌকা নিয়ে তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন।

ঝালকাঠি থানায় অপমৃত্যু মামলা:

ওদিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ অভিযান-১০-এ অগ্নিকাণ্ড এবং ৩৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধারসহ অসংখ্য মানুষ নিখোঁজের ঘটনায় ঝালকাঠি থানায় শুক্রবার রাতে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ শনিবার দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকার গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মামলাটি দায়ের করেন।

ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশের এই কর্মকর্তা তদন্তকাজ শুরু করেছেন।

তদন্তদল ঝালকাঠিতে :

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব তোফায়েল হাসানের নেতৃত্বে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাত সদস্যের তদন্তদল সকাল সাড়ে ১০টায় ঝালকাঠির লঞ্চঘাট এলায় এসে আগুনে পুড়ে যাওয়া লঞ্চটি পরিদর্শন করেন। লঞ্চের ইঞ্জিন রুমসহ বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে তদন্ত করছেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী মো. শাজাহান খান।

এ সময় তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দিলে আমরা জানতে পারব দুর্ঘটনার আসল কারণ। যারা এর জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু সে ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. কামাল উদ্দিন ভূইয়া বলেন, ‘ইঞ্জিন কক্ষ থেকেই আগুন লাগে। আমরা যেভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করে কার্বন ডাই-অক্সাইড ছেড়ে দিই, লঞ্চেও একটি ইঞ্জিন রয়েছে যেটি বাইরে ধোঁয়া ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু এটা যখন আটকে পড়ে, তখন বিস্ফোরণ হয়। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, ইঞ্জিন কক্ষ থেকেই আগুন লেগেছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here