সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিনকে শেষবিদায়

0
261

বাংলা খবর ডেস্ক,ঢাকা:
একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন সম্পাদকদের সম্পাদক। তিনি ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শের বাইরে গিয়ে সাংবাদিকদের স্বার্থে কাজ করে গেছেন। সাংবাদিক সমাজে তাঁর অভাব কোনোভাবেই পূরণ হওয়ার নয় বলে মনে করছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

আজ রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় এমন মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতারা। এ সময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম, নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সভাপতি এ কে আজাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের ছেলে এম মাসরুর রিয়াজ।

জানাজায় আরো অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য মো. শফিকুর রহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মো. সাইফুল আলম, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বুলবুল ও বর্তমান সভাপতি ওমর ফারুক, নোয়াব সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খান, সম্পাদক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের ভাই কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।

এ সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘তিনি (রিয়াজ উদ্দিন) আমাদের অত্যন্ত প্রিয়জন ছিলেন। আমাদের অভিভাবক ছিলেন। আজ তাঁকে নিস্তব্ধ নিথর রেখে আমরা কথা বলছি, এটা আমরা কয়েক দিন আগেও ভাবতে পারিনি। সংকটে পড়লে আমরা তাঁর পরামর্শ নিতাম।’

নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, সাংবাদিকতার যত গুণ আছে, সব ছিল রিয়াজউদ্দিন আহমেদের মধ্যে। সাংবাদিকদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে তিনি সমন্বয়ের ভূমিকা পালন করতেন। নতুন প্রজন্ম তাঁর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ বলেন, সাংবাদিকতা জগতে যেকোনো বিরোধ মেটাতে রিয়াজউদ্দিন আহমেদ ভূমিকা পালন করতেন। তিনি সবাইকে অনুপ্রাণিত করতেন।

প্রয়াত রিয়াজউদ্দিন আহমেদের ছেলে এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘উনার ছিল দুটি পরিবার। আমরা ছিলাম উনার রক্তের পরিবার। কিন্তু উনার রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও আমাদের চেয়ে বড় পরিবার ছিল প্রেস ও মিডিয়া কমিউনিটি।’

জানাজা শেষে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে রিয়াজউদ্দিন আহমেদের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদীর নারান্দীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

রিয়াজউদ্দিন আহমেদ শনিবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি করোনা-পরবর্তী জটিলতায় ভুগছিলেন।

পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকায় যোগদানের মধ্য দিয়ে ১৯৬৮ সালে সাংবাদিকতা শুরু করেন রিয়াজউদ্দিন আহমেদ। ইংরেজি সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই খ্যাতিমান সাংবাদিক প্রায় ৫০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে দ্য ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের প্রধান সম্পাদক, দ্য নিউজ টুডে সম্পাদক ও প্রকাশক, ডেইলি টেলিগ্রাফ সম্পাদক, ডেইলি স্টারের উপসম্পাদক ছিলেন। রিয়াজউদ্দিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার তথ্য উপদেষ্টা ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি প্রথমে ছাত্রলীগ ও পরে বাংলা ছাত্রলীগের শীর্ষনেতা ছিলেন। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, বিএফইউজের সভাপতি ও মহাসচিব, সার্কভুক্ত দেশগুলোর সাংবাদিকদের ফেডারেশন সমন্বয়ে গড়া দক্ষিণ এশিয়া সাংবাদিক সমন্বয় পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here