‘রাশিয়ার হামলা যেকোনো সময়’

0
70

বাংলা খবর ডেস্ক:
কূটনৈতিকভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা নিরসনে জার্মানিতে হওয়া আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। শুক্রবার রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে জানানো হয়েছে বিষয়টি। খবর রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে কোনো সময় রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসবে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্থনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, রাশিয়া সীমান্তে আরও সৈন্য জড়ো করছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শীতকালীন অলিম্পিক চলাকালীন সময়েই যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে কোয়ার্ডের বৈঠক শেষে ব্লিংকেন বলেন, আমরা এমন পর্যায়ে আছি যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হতে পারে। আরও পরিষ্কার করে বলা যায় অলিম্পিক চলাকালীন সময়েই ইউক্রেনে হামলা হতে পারে।

শোনা যাচ্ছিল চীনকে খুশি রাখতে অলিম্পিক চলাকালীন সময়ে যুদ্ধে জড়াবেন না পুতিন। কারণ এতে করে অলিম্পিকের ওপর থেকে মানুষের নজর সরে যাবে।

ব্লিনকেন আরও বলেন, খুব সহজ। আমরা রাশিয়ার হামলা করার প্রস্তুতি অব্যাহতভাবে দেখে যাচ্ছি।

এদিকে এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নতুন করে নিজ দেশের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার জন্য অনুরোধ জানান।

এ ব্যপারে তিনি বলেন, যেকোনো সময় সতর্কতা ছাড়াই রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে। সেই সময় ইউক্রেন ত্যাগে মার্কিন নাগরিকদের সহায়তা সহ কনস্যুলার পরিষেবা প্রদান করা মার্কিন দূতাবাসের জন্য কঠিন হতে পারে। সূত্র: রয়টার্স, ডেইলি সাবাহ

মার্কিন নাগরিকদের দ্রুত ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশনা দিলেন জো বাইডেন:

তবে কী যুদ্ধ লাগলো বলে! সে ইঙ্গিতই পাওয়া গেলো ইউক্রেনে থাকা নাগরিকদের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনা থেকে। তিনি অতি দ্রুত সকল মার্কিন নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার আহবান জানিয়েছেন। যে কোনো সময় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন সবাইকে। এরইমধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে জরো হওয়া রুশ সেনার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজারে। সীমান্তের আরেক দিকে বেলারুশ ও রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া চলছে। পশ্চিমা নেতারা বলছেন, রাশিয়ার প্রস্তুতি বলছে যে কোনো সময় ইউক্রেন আক্রমণ হতে পারে। সেই আভাস থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্টও সকল নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছেন। জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে তাহলে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠাবে না।
একইসঙ্গে যে কোনো সময় এই অঞ্চলে পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে, রাশিয়া এখনো যে কোনো হামলা পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে চলেছে। যদিও দেশটির প্রস্তুতি বলছে অন্য কথা। ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মিত্র দেশ বেলারুশের সঙ্গে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া। এদিকে ইউক্রেনের পাশে থাকা কৃষ্ণ সাগরেও অবস্থান নিতে শুরু করেছে রুশ যুদ্ধ জাহাজগুলো। ইউক্রেন অভিযোগ করেছে যে, রাশিয়া তাদের জাহাজকে এ সাগরে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের এখনই ইউক্রেন ত্যাগ করা উচিত। আমরা বিশ্বের সবথেকে বড় সেনাবাহিনীগুলোর একটির মোকাবেলা করছি। এটি খুবই আলাদা একটি পরিস্থিতি এবং যে কোনো সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। এসময় বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয় যে, প্রয়োজনে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধারে সেনা পাঠাবে কিনা যুক্তরাষ্ট্র। উত্তরে তিনি বলেন, সেটি হবে না। যখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একে অপরের দিকে গুলি ছুড়বে তখন সেটি বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হবে। আমরা এখন এমন একটি বিশ্বে বাস করছি যা আগে কখনো ছিলনা।

এর আগে বৃহস্পতিবার বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও রুশ হামলার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তিনিও বিশ্বাস করেন যে, রাশিয়া এখন যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা করতে পারে। এই পরিস্থিতিকে তিনি সংকটের সবথেকে ভয়ানক পর্যায় বলে আখ্যায়িত করেন। বলেন, গত কয়েক দশকের মধ্যে সবথেকে ভয়াবহ নিরাপত্তা সংকটে পরেছে ইউরোপ। নিজেদের গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করেই এই সতর্ক বার্তা দিয়েছেন তিনি। যদিও সাংবাদিকদের কাছে জনসন কিছুটা আশার বানীও শুনিয়েছেন। ব্রাসেলসে তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে আমি মনে করি যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here