ফুসফুসের মারাত্মক রোগটির ঝুঁকিতে রয়েছেন কি

0
359

স্বাস্থ্য ডেস্ক: ফুসফুস আপনার দেহে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং তা সারা দেহের রক্তে ছড়িয়ে যেতে সহায়তা করে। আর দেহের অক্সিজেন গ্রহণের জন্য এ অঙ্গটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। ফুসফুসের যে কোনো রোগ বহুদিন পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। আর এ রোগ প্রকাশ পেলে হঠাৎ করেই মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। ফুসফুসের সংবেদনশলীতার কারণেই এ অঙ্গটির যে কোনো সমস্যাই বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। ফুসফুসের এ ধরনের একটি সমস্যা হলো ইন্টারস্টিশিয়াল লাংস ডিজিজ (আইএলডি)। এটি দেহের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তৈরি করতে পারে।

আইএলডি সমস্যাটি নানা কারণে হয়ে থাকে। এ বিষয়টি বোঝার জন্য সবার আগে ফুসফুসের কার্যক্রম বোঝা প্রয়োজন। ফুসফুসে রয়েছে অসংখ্য জালের মতো নেটওয়ার্ক, যাকে ইনটেস্টিটিয়াম বলা হয়। এটি খুব সূক্ষ বায়ুকণাকে ধারণ করে। এগুলোর ভেতরে আবার রক্তপরিবাহী নালীগুলোও থাকে। সেখানেই বাতাস থেকে রক্তে স্থানান্তর হয়ে যায় অক্সিজেন। আইএলডি রোগ হলে সেখানকার মেমব্রেনগুলো পুরু হয়ে যায় এবং দেহে অক্সিজেন গ্রহণে বাধা দেয়। এ কারণে রোগটি ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।

আইএলডির কারণঃ
পাখির মলের কণা ও ধুলোবালি ফুসফুসে ঢুকে নিভমোকোনিওসিস সৃষ্টি করে। নাক দিয়ে জৈব এন্টিজেন যেমন পাখির পশম বা পালকের কণা ঢুকে এক্সট্রিনসিক অ্যালার্জিক এলভিওলাইটিস রোগের সৃষ্টি করে। কারও কারও ক্ষেত্রে ওষুধ সেবনের ইতিহাস থাকে, এর ফলে ফুসফুসে ফাইব্রোসিস সৃষ্টি হয়। ফুসফুসে কিছু পরিচিত ধরনের ক্যানসার যেমন লিউকেমিয়া বা লিস্কোমার জটিলতায় এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আইএলডি ফুসফুসের অভ্যন্তরীণ কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন করে। এদে প্রদাহ এবং ফাইব্রোসিস একসঙ্গে ঘটতে থাকে। রোগটি পুরুষের মধ্যে বেশি দেখতে পাওয়া যায়, যদিও যে কোন বয়সেই এটি হতে পারে। তবে ৫০-৬০ বছরের মধ্যে বেশি দেখা দেয়। অনেক সময় এটা বংশগতও হতে পারে। এ রোগটি কিভাবে দেহে শুরু হয় তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। ধারণা করা হয়, প্রতিরোধব্যবস্থা, প্রদাহের কারণে কোষের ধ্বংস হওয়া এবং কোলাজেন জমে থাকায় এ রোগ হয়ে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে সামান্য ফ্লু ধরনের অসুস্থতা নিয়ে রোগ শুরু হয় যদিও জীবাণু সংক্রমণের লক্ষণ প্রথমে ধরা পড়ে না। এটা ধরে নেয়া হয় যে, প্রথমে প্রদাহ হয় এবং পরে স্কাইব্রোসিস ঘটতে থাকে।

রোগ নির্ণয়ঃ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রোগী প্রথমে চিকিৎসকের কাছে আসে শ্বাকষ্টের সমস্যা নিয়ে, যা পরিশ্রমে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। অনেক রোগীরই কষ্টদায়ক কাশি থাকে। কাশির সঙ্গে কফ থাকে না। শ্বাসকষ্টের সঙ্গে হাত-পায়ের জোড়ায় জোড়ায় ব্যথা অর্থাৎ আর্থাইটিস থাকতে পারে। ফুসফুস পরীক্ষা করলে নিচের দিকে মৃদু গড়গড় শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। যদিও পরের দিকে ফুসফুসের সব জায়গায়ই এই শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। অনেক সময় একটু বেশি পরিশ্রম করলে ঠোঁট, জিহবা, নীলবর্ণ ধারণ করে। এ রোগের শেষের পর্যায়ে ফুসফুস ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যেতে থাকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here