মিশরে কেন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায় মানুষ

0
403

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: মিশরে গত চার বছরে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ লোক নিখোঁজ হয়েছে বলে একটি মানবাধিকার সংগঠন বলছে, তাদের কাছে এর দলিলপত্র আছে। কিন্তু তাদের মতে আসল সংখ্যা আরো অনেক বেশি। মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদে লফতির ভাষায়, প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসির শাসনের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে এসব রহস্যজনক অন্তর্ধান।

সরকারের বিরোধী, বা বিরোধী বলে সন্দেহ করা হয় – এমন যে কেউ এখন ঝুঁকির মুখে – সে সন্দেহ ঠিক হোক বা না হোক তাতে কিছু এসে যায় না। সন্দেহভাজনদের আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুরাও কখনো কখনো গ্রেফতার হতে পারেন। এসব আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু অনেকে ইসলামপন্থী। মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, এইসব নিখোঁজরা যখন কয়েক সপ্তাহ বা মাস পরে আবার আবির্ভূত হন, তার আগে তাদের ওপর অত্যাচার করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে আনা হয় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ।

কায়রোতে ২০১১ সালের গণঅভ্যুত্থানের কেন্দ্রবিন্দু তাহরির স্কোয়ার এখন পর্যটকদের সেলফি তোলার জায়গায় পরিণত হয়েছে। মিশরে এখন মৃত্যুদণ্ড, গুম, নির্যাতন প্রতিদিনের খবর হয়ে গেছে।যারা আগে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে যুক্ত থাকলেও এখন নিরব হয়ে গেছেন – তারাও এখনো আটক হচ্ছেন। ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ মোরসি প্রেসিডেন্ট হবার এক বছরের মধ্যেই ক্ষমতাচ্যুত হন। এর পর ২০১৩ সালে ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এখন আক্রান্ত। মিশর হচ্ছে সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর ক্ষেত্রে পৃথিবীতে তৃতীয় স্থানে। মার্চের ২৮ তারিখ মিশরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে যারা আল সিসির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন তারা অযোগ্য ঘোষিত হয়েছেন, কেউ আটক হয়েছেন, কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অবশ্য একজন ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ আছেন – তিনি মধ্যপন্থী মুসা মুস্তাফা মুসা – তাকে সাজানো প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হলেও তিনি তা অস্বীকার করেন। অনেকে বলেছেন, এ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট সিসির সাথে তার ছায়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট সিসির সময় মিশরে ১৭টি নতুন কারাগার নির্মিত হয়েছে, রাজনৈতিক বন্দীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার – বলেন মানবাধিকার কর্মীরা। প্রেসিডেন্ট সিসি গত অক্টোবর মাসে বলেছেন, মানবাধিকারের ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হয়, এটা ইউরোপ নয় – এটা অন্য জায়গা। তার কথা, মানবাধিকার গ্রুপগুলোর তথ্য বিশ্বাসযোগ্য নয়।আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকে মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসির মানবাধিকার রেকর্ড দেখেও না দেখার ভান করে। কারণ তিনি উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে একজন মূল্যবান মিত্র।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here