আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নতুন করে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একক সিদ্ধান্তে বাসার আল আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণার পরপরই পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া। ফলে এক প্রকার মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর চীফ অফ জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গিয়ারসিমোভ এর উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আরআইএ এবং টাস এই হুঁশিয়ারির সংবাদ দিয়েছে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় কোনো হামলা হলে রাশিয়া পাল্টা পদক্ষেপ নেবে। এর আগে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি সোমবার বলেছিলেন, জাতিসংঘ যদি কিছু করতে না পারে, তবে পূর্ব ঘৌটায় বেসামরিক লোকদের ওপর সিরীয় বাহিনীর বোমা হামলা বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপ নিতে চাইছে।
নিকি হ্যালি বলেন, যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো কিছু করতে ব্যর্থ হয়, তখন যুক্তরাষ্ট্রকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হতে হয়। সিরিয়ার পূর্ব ঘৌটায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উত্থাপনের পর তিনি এসব কথা বলেন। নিকি হ্যালি বলেন, আমরা এই পথকে প্রাধান্য দিচ্ছি না। কিন্তু বাধ্য হলে আমরা তা করতে প্রস্তুত আছি।
এদিকে সিরিয়ার রাজাধানী দামেস্ক এবং দেশটির বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বহু রুশ সামরিক উপদেষ্টা এবং কর্মকর্তা রয়েছেন। সিরিয়ায় মার্কিন হামলায় কোনো রুশ কর্মীর জীবন হুকমির মুখে পড়লে এর জবাবে মস্কো পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া এক বক্তব্যে নিকি হ্যালি বলেন, সিরিয়া সংকট মোকাবেলায় নিরাপত্তা পরিষদ ব্যর্থ হলে ওয়াশিংটন একাই পদক্ষেপ নেবে। এ সময় তিনি ২০১৭ সালে রাসায়নিক হামলার অজুহাতে সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটিতে মার্কিন হামলার প্রতি ইঙ্গিত করেন।
জেনারেল ভ্যালরি বলেন, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার জন্য দেশটির সরকারি সেনাদের অভিযুক্ত করার পাঁয়তারা করছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে রাশিয়ার সমর্থনে সিরিয়ার সরকারের হাতে বেসামরিক ব্যক্তিদের গণহত্যার কথিত প্রমাণ বিশ্ব সমাজের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছে আমেরিকা।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করছে। তিনি আরো বলেন, মস্কোর কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে যে সন্ত্রাসীরা বেসামরিক ব্যক্তিদের ওপর রাসায়নিক হামলা চালিয়ে এর দায় সিরীয় সরকারের ওপর চাপানো চেষ্টা করছে।
এদিকে সিরিয়ার সরকার ও তার মিত্ররা বলছেন, সিরিয়ায় তৎপর সন্ত্রাসীদের বাঁচাতেই যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির নতুন নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করছে। কারণ সিরিয়ায় আমেরিকা সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়েছে।