সরকারী চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছেন। আন্দোলনকারী সংগঠন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর বাইরেও আরও দু’টি গ্রুপ হয়েছে। তবে মঙ্গলবার মূল কমিটির বাইরে একটি কমিটিকে আন্দোলনে দেখা গেছে। মূলত কোটা সংস্কারের মূল কমিটির আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকের পর এই গ্রুপ হয়েছে। আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করার পর মূল কমিটিকে সরকারের দালাল আখ্যা দিয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপগুলো। সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে এই গ্রুপগুলো আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তেজনা শুরু হয়। সংসদের মতিয়া চৌধুরীর বক্তব্য, হলে হামলা, পুলিশি হামলার প্রতিবাদে একটা গ্রুপ রাজু ভাস্কর্যের সামনে অস্থান নেয়। তারা সরকারের কাছ থেকে কোটা সংস্কারের লিখিত দাবি করেছে তিনদিনের মধ্যে। সকাল থেকে একটি গ্রুপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রথমে মানবন্ধন করে। পরে তারা রাজু ভাস্কর্জের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
একটি বিদ্রোহী গ্রুপের আন্দোলনকালী বলেন, ‘আমরা কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মূল কমিটির সঙ্গে একমত। তবে আমরা সরকারের মুখের কথা বিশ্বাস করি না। তিন দিনের মধ্যে সংস্কারের বিষয় লিখিত দিতে হবে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলার শিকার হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। হামলার বিচার করতে হবে। হলের ভেতর পুলিশ হামলার বিচার করতে হবে। এজন্য আমরা এই আন্দোলন করছি।’ তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। এর বেশি কোটা রাখা যাবে না।’
এদিকে আরেকটি গ্রুপ কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মূল কমিটি বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল গতকাল। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে তারা মঙ্গলবার আবার কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে কথা বলে তাদের আগের জায়গা থেকে সরে এসে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। এই গ্রুপের এক কর্মী বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) আমাদের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে ওই কথাগুলো বলা হয়। আমাকে কথাগুলো বলানো হয়েছিল। তবে আমি গতকালের বক্তব্য প্রত্যার করছি। আমি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গেই আছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি তখন বুঝতে পারিনি। আমি কোনও আলাদা গ্রুপের না, আমি মূল কমিটির সঙ্গেই আছি। আমাকে উম্মে হাবীবা বেনজীর নামে এক কর্মী ওই কথাগুলো বলতে বলেছিলেন।’
এই গ্রুপের আরও একজন বলেন, ‘মূল কমিটির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমারা গতকাল যে কর্মসূচি দিয়েছিলাম, তা প্রত্যাহার করছি। আমাদের কোনও কর্মসূচি নেই। আজ যারা ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করছেন, তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। আমাদের কোনও গ্রুপ নেই।’
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নূরুল হক বলেন, ‘গতকাল যে যারা আমাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে, তারা আমাদের কেউ না। আমাদের সারা বাংলাদেশে কমিটি রয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here