চীনা বিপ্লবী মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক নেতা মাও সেতুং এর প্রিয় শহর ওয়াহানে শুক্রবার ‘ঘরোয়া’ বৈঠকে বসছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
পুঁজিবাদী বৈভব আর ‘সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতি’র চীনে এখন অনেকটাই মুছে গিয়েছেন মাও সেতুং। কিন্তু শুক্রবার থেকে মধ্য চীনের যে ওয়াহান শহরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং-এর ‘ঘরোয়া’ আলোচনা শুরু হচ্ছে, সেটি কিন্তু মাও-এর স্মৃতি বিজড়িত!
ওয়াহান শহরে ইস্ট লেকের পাশে যে বাংলোয় মোদি উঠেছেন সেখানে মাও আসতেন অবকাশ যাপনে। ১৯৬৬ সালে রটে গিয়েছিল তিনি গুরুতর অসুস্থ। হঠাৎই এখানে দেখা যায় মাওকে। এই লেকে তিনি সাঁতারও কেটেছিলেন। এই শহর থেকেই শুরু হয়েছিল চীনের সাংস্কৃতিক বিপ্লব। ওয়াহানে বার্ষিক সাঁতার উৎসব আজও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক কর্মকর্তার মতে, ‘এই বৈঠকের যে ঘরোয়া আঙ্গিক, তার সঙ্গে এই নিসর্গ খাপ খায়।’
দিল্লির চীনা রাষ্ট্রদূত লুও ঝাংহুই-এর দেশের বাড়িও ওয়াহানে। একটি ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার নিজের শহরে এই যে ঐতিহাসিক বৈঠকটি হচ্ছে, এটা আমারও গর্বের বিষয়।’
বৈঠকের তাগিদটা কিন্তু বেশি নয়াদিল্লির। লোকসভা ভোটের আগে ডোকলামের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ফের মুখ পোড়াতে চায় না মোদি সরকার। পাশাপাশি বাণিজ্য প্রশ্নে আমেরিকা ও ইউরোপের রক্ষণশীলতায় একটি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের নতুন দরজা খুলতে পারলে দিল্লির লাভ হবে।
আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ চলাকালীন ভারতের বিশাল বাজারকে ধরতে পারাটাও শি জিংপিং-এর অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ছে। ভারত সরকার বেশ কিছু ক্ষেত্রে চীনা পণ্যের উপর শুল্ক না বসিয়েও আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম বাধা তৈরি করছে বলে অভিযোগ বেজিংয়ের। এই বিষয়ে জোর দেবেন চীনা প্রেসিডেন্ট।- আনন্দবাজা পত্রিকা অবলম্বনে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here