খেলা ছাড়ার পর ক্রিকেট প্রশাসন নিয়েই তুমুল ব্যস্ত এখন কলকাতার মহারাজা সৌরভ গাঙ্গুলি। পশ্চিম বাংলা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (সিএবি) প্রধান তিনি। সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিয়োগকৃত লোধা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান হওয়ারও সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে তার। খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই নেতৃত্বগুণ তার সহজাত। ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দীর্ঘদিন এবং ভারতীয় অধিনায়কদের মধ্যে অন্যতম সফল একজন তিনি।

এবার তাকেই ভবিষ্যতে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করলেন সৌরভেরই সাবেক সতীর্থ বিরেন্দর শেবাগ। দিল্লির নজফগড়ের নবাবের মতে, গাঙ্গুলিকে একদিন অবশ্যই কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখা যাবে সৌরভ ।
সৌরভ গাঙ্গুলিকে তো দীর্ঘদিন একেবারে কাছ থেকে দেখেছেন বিরেন্দর শেবাগ। ড্রেসিং রুম শেয়ার করেছেন, খেলেছেন একসঙ্গে। এমনকি নিজের খেলোয়াড়ী জীবনে শেবাগ ছিলেন সৌরভের খুবই আস্থাভাজন একজন। এ কথা শেবাগ নিজেই অনেকবার স্বীকার করেছেন। এমনকি এমনও বলেছেন, তার নিজের ক্যারিয়ারে অনেক অবদান রয়েছে সৌরভের।
সেই বিরেন্দর শেবাগ এবং সৌরভের ক্যারিয়ারের আরেক সতীর্থ যুবরাজ সিংকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলির আত্মজীবনী ‘অ্যা সেঞ্চুরি ইজ নট এনাফ’-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে। সেখানেই মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলি সম্পর্কে রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণী করে বসেন শেবাগ। সাবেক ভারতীয় ওপেনারের মতে, সৌরভ শুধুমাত্র পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীই নয়, ভবিষ্যতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টও হবেন।

বিরেন্দর শেবাগ বলেন, ‘১০০ ভাগ নিশ্চিত, দাদা (সৌরভ) ভবিষ্যতে একদিন অবশ্যই পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তবে তার আগে তিনি নিশ্চিত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হবেন।

ক্রিকেট প্রশাসনে ইতিমধ্যেই হাত পাকিয়েছেন সৌরভ। সিএবি সভাপতি হিসাবে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। লোধা কমিটির প্রস্তাব কার্যকর করা নিয়ে বিসিসিআই সিওএ’র বর্তমান অবস্থানে সৌরভের বোর্ডের সর্বোচ্চ পদে আসীন হওয়ার সম্ভাবনা রীতিমতো হাওয়ায় ভাসছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিসিসিআই’র মসনদে মহারাজাকে দেখার ভবিষ্যদ্বাণী করতেই পারেন শেবাগ। তবে পশ্চিম বাংলার সংসদীয় রাজনীতিতে সৌরভ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত না হওয়া সত্ত্বেও শেবাগ তাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখার সম্ভাবনার কথা বলায়, ভারতের এই রাজ্যটির রাজনৈতিকমহলের নড়েচড়ে বসা স্বাভাবিক।

বিশেষ করে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য রাজনীতির উত্তপ্ত আবহে বীরুর এমন ভবিষ্যদ্বাণী ইঙ্গিতবহ হয়ে দেখা দিচ্ছে। গত লোকসভা নির্বাচনে সৌরভকে নিয়ে রাজনৈতিক ছক কষা শুরু করেছিল বিজেপি। পরে সৌরভকে সিএবি সভাপতির পদে বসাতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উভয়ের সঙ্গেই তার সুসম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে সংসদীয় রাজনীতির আঙিনায় পা দিলে সৌরভ কোন শিবিরের পতাকা বহন করতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here