হলিউডের প্রযোজক হারভে উইন্সটেনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির শিকার নারীর তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন নেটপ্লিক্স শো ‘মারকো পোলো’র প্রযোজক আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা। তিনি বলেছেন, কয়েক বছর তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। এ সময়ে কমপক্ষে ৯ বার তাকে ধর্ষণ করেছেন হারভে। আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা বলেছেন, গত আগস্টে যখন হারভের বিরুদ্ধে একের পর এক ধর্ষণ সহ যৌন হয়রানির অভিযোগ আসছিল তখন থেকেই তাকে নীরব থাকার জন্য হুমকি দিয়েছেন হারভে। তিনি বলেছেন, ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তাকে ধর্ষণ করেছেন হারভে। এ জন্য তিনি হারভে উইন্সটেন, তার ভাই, উইন্সটেন কোম্পানির পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সোমবার। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ধর্ষণের কাহিনী প্রকাশ না করতে তাকে হুমকি দিয়েছেন উইন্সটেন। তবে হারভে উইন্সটেনের আইনজীবীরা অভিযোগ বানোয়াট  ও রহস্যজনক বলে অভিহিত করেছেন। আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা তার অভিযোগে বলেছেন, ২০১০ সালে প্রথম তাকে ত্রিবেকা গ্রান্ড হোটেলে ধর্ষণ করেন হারভে উইন্সটেন। এ ধারা অব্যাহত থাকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এ সময়ে হারভে তাকে ধর্ষণ করেন নিউ ইয়র্কে, লস অ্যানজেলেসে, মালয়েশিয়া ও বুদাপেস্ট সহ বিভিন্ন স্থানে। এ কথা প্রকাশ করলে তাকে চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়া হয়েছিল। আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা বলেছেন, নিজে যৌন সুবিধা নেয়ার জন্য তাকে ব্লাকমেইল করেছেন হারভে। আলেকজান্দ্রা ক্যানোসার মামলার বর্ণনা মতে ২০১০ সালের ১২ই আগস্ট ম্যানহাটানে ত্রিবেকা গ্রান্ড হোটেলে প্রথম তাকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত লস অ্যানজেলেসের মন্টেজ হোটেল ও পেনিনসুলা হোটেলে বেশ কয়েকবার একই ঘটনা ঘটে। আবার সেই ত্রিবেকা গ্রান্ড হোটেলে ২০১২ সালের ২ রা মে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে একই ঘটনা ঘটতে থাকে। ২০১২ সালের ২২ শে অক্টোবর পেনিনসুলা হোটেলে, ২০১২ সালের ২০ শে ডিসেম্বর ত্রিবেকা গ্রান্ড হোটেলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা দাবি করেছেন ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অনেকবার তাকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করা হয়েছে মালয়েশিয়ায়। এ ছাড়া ২০১৪ সালের ২০ শে মে তাকে মৌখিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় ওই মালয়েশিয়ায়ই। একই বছর একই ঘটনা ঘটে ২১ শে ডিসেম্বর বেভারলি হিলসের পেনিনসুলা হোটেলে। ২০১৫ সালের ২৪ শে জুন বুদাপেস্টে ফোর সিজনস হোটেলে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। অভিযোগে আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা বলেছেন, অনেক সময়েই ব্যবসা ও মিটিংয়ের কথা বলে হারভে উইন্সটেন তাকে নিয়ে যেতেন নির্জন পরিবেশে। যখন তাদের মধ্যে বৈঠক বসতো তখন তিনি নিশ্চিত হয়ে নিতেন যে সেখানে অন্য কেউ নেই। এমন বৈঠকেই হারভে উইন্সটেন যৌন সুবিধা দাবি করে বসতেন। তাতে সায় দিতেন না আলেকজান্দ্রা ক্যানোসা। এ সময়ে তাকে বাধা দেয়া সত্ত্বেও হারভে উইন্সটেন ঝাঁপিয়ে পড়তেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here