বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহা সচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হলেও এখনও তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়নি সরকার। আমরা বার বার বলছি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার। কিন্তু সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার বিষয়ে কোন কর্ণপাতই করছে না। উল্টো আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনাসহ তাদের দলীয় নেতা-কর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে ইয়ার্কি-ঠাট্টা করছেন। এদের নিষ্ঠুর রসিকতায় দেশবাসী বিস্মিত ও হতভম্ব। যারা হত্যা এবং লাশ নিয়ে খেলা করে তাদের কাছে মানুষের জীবনের কিইবা দাম আছে ?

শনিবার (৫ মে) দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশনেত্রীকে মিথ্যা সাজানো ও জাল নথি তৈরির মাধ্যমে সাজা দিয়ে বন্দী করে বিনা চিকিৎসায় ধূকে ধুকে কষ্ট দেওয়াটাই হচ্ছে সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য। এর পেছনে সরকার প্রধানের চরম প্রতিহিংসা কাজ করছে। দেশনেত্রীর প্রতি সরকারের আচরণ চরম মানবধিকার লঙ্ঘন ও আইনের লঙ্ঘন। গতকালও আমরা খবর পেয়েছি-তাঁর হাঁটু ও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথাসহ নানাবিধ জটিল শারীরিক সমস্যা তাঁকে আক্রান্ত করছে। স্যাঁতসেতে পরিবেশে পরিত্যক্ত রুমে থাকায় এখন তিনি প্রায়ই জ্বরে ভুগছেন এবং কফ লেগেই আছে। স্যাঁতসেতে ও ধুলাকীর্ণ এরকম অবস্থায় সাধারণত: নিউমোনিয়ার আশঙ্কা থাকে। তাঁর চোখে যে ব্যথা হচ্ছে সেটি এখনও সারেনি অর্থাৎ একই অবস্থাই আছে। কিন্তু সরকার তাঁকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করছে। উনার হাঁটুতে ফরেন বডি থাকা এবং পিঠে-ঘাড়ে ও কোমরে প্রচণ্ড ব্যথার জন্য বিশেষ ধরণের এমআরআই এর প্রয়োজন। কিন্তু তাঁর জন্য বিশেষ এমআরআই এর যে দাবি করা হয়েছিল সেটিকেও সরকার পাত্তা দেয়নি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, কারা আইনে একজন বন্দীর সাথে প্রতিদিনই দেখা করার বিধান রয়েছে, কিন্তু প্রতিদিন দূরের কথা, দেশনেত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের যেখানে সপ্তাহে একদিন দেখা করতে দেয়া হতো সেখানে এখন ১০ দিন পর পর দেখা করার আদেশ জারি হবে বলে শোনা যাচ্ছে। জুলুমশাহীর হিংসা আচরণে দেশনেত্রীকে জর্জরিত করার জন্যই কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। দেশনেত্রীর সঙ্গে সরকারের এহেন আচরণে গোটা জাতি শুধু গভীরভাবে উদ্বিগ্নই নয়, মারাত্মকভাবে আতঙ্কিত। আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রীকে তাঁর পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যত্থায় দেশবাসী আর বসে থাকবে না। নিজেদের দায়িত্ব নিজেরাই পালন করবে।

গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, লুট, হরিলুট, চাঁদাবাজী, দখলবাজী, দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি, সমস্ত ট্যাক্স, হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যূতের দাম বৃদ্ধি ও নির্যাতন-নিপীড়ণে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে যে ক্ষোভের আগুন জ¦লছে, যেভাবে মানুষের বাক-স্বাধীনতা হরণ করে কালা বোবা বানানো হয়েছে, তা থেকে বাঁচতে পুরো জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই-অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তাঁকে তাঁর পছন্দ অনুযায়ী সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here