গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিতাদেশ উঠে যাওয়ায় টঙ্গীতে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এ সময় তারা নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নানা স্লোগান দেয়।
আগামী ১৫ মে খুলনার সঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ বি এম আজহারুল হক সুরুজের এক রিট আবেদনে গত ৬ মে ভোট তিন মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়।

সুরুজের দাবি তার ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা গাজীপুর সিটি করপোরেশনে পড়েছে। এবং এতে ওই মৌজার ভোটাররা দুই এলাকার ভোটার হয়ে গেছে।

তবে সুরুজের আপত্তির বিষয়টি নিয়ে পরে নানা দুর্বলতা বের হয়ে আসে। জানা যায়, ২০১৩ সালেও বর্তমান সীমানাতেই ভোট হয়েছিল।

গত ৭ মে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে প্রথম আপিল করেন বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। পরদিন জাহাঙ্গীর এবং পরে নির্বাচন কমিশনও আপিল করে।

আজ বুধবার তিনটি আপিলের শুনানি একসঙ্গে চলবে বলে জানানো হয়। আর এরই মধ্যে সুরুজের আবেদনের দুর্বলতা এবং সীমানা বিরোধের বিষয়টি আগেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মীমাংসা করেছে বলে খবর প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।

এ কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আশায় ছিল, স্থগিতাদেশ থাকবে না। আর বুধবার সকাল নয়টা থেকেই টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন মূল দলের পাশাপাশি যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা।

এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে একজন নেতা বলেন, ‘আমরা সংকেত পেয়েছি, আশাবাদী রায় আমাদের পক্ষে যাবে। নির্বাচন যথাসময়ে হবে।’

দুপুর আপিল বিভাগ টঙ্গীতে ভোটে স্থগিতাদেশ তুলে ২৮ জুনের মধ্যে ভোটের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশনকে আদেশ দেয়ার পর পর থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে শুরু হয় মিছিল।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও টঙ্গীর সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেলের চাচা মতিউর রহমান মতি, টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রজব আলী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মঞ্জুর এই মিছিলে যোগ দেন।

তবে টঙ্গী আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতা ও ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লাহ খানের দুই একজন সমর্থক ছাড়া কাউকে এই মিছিলে দেখা যায়নি। মিছিলে আজমত উল্লাহ খান অনুসারী হিসেবে পরিচিত গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওসমান আলী খান, টঙ্গী থানা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাত্তার মোল্লা, টঙ্গী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম এম নাসির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

মিছিলকারীরা নানা ধরনের স্লোগান দিচ্ছিল।। এর মধ্যে আছে, ‘জাহাঙ্গীর ভাইয়ের সালাম নিন নৌকা মার্কায় ভোট দিন’, ‘রাসেল (টঙ্গীর সংসদ সদস্য) ভাইয়ের সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন’।

কেউ বলতে থাকে, ‘সিল মারো ভাই সিল মারো, নৌকা মার্কায় সিল মারো’। কেউ বলে, ‘নৌকা মার্কা দেখিয়া, ভোট দিব হাসিয়া।’

২০০৪ সালে টঙ্গীর সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার বিষয়টিও উঠে আসে স্লোগানে। নেতা-কর্মীরা বলতে থাকেন, ‘প্রিয় স্যারের খুনিদের, ভোট দেব না ভোট দেব না।’

১৪ বছর আগে ৭ মে টঙ্গীতে জনসভায় প্রকাশ্যে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয় জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারকে। এই মামলায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের ভাই নুরুল ইসলাম সরকারসহ ছয় জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে।

জোট সরকারের আমলে করা এই মামলায় হাসান উদ্দিন সরকারকে আসামি না করায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল প্রয়াত সংসদ সদস্যের পরিবার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here