আদালতের রায়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর নতুন ভোটগ্রহণের তারিখ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটের দিন নির্ধারণ নিয়ে আগ্রহ বেশি ভোটার, প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের। স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারে না নামলেও ঘরোয়া বৈঠকে আগামী দিনের করণীয় ঠিক করছেন। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকের সঙ্গে দফায়-দফায়

বৈঠক করে ভোটারদের আকর্ষণ বাড়াতে কর্মকৌশল ঠিক করছেন তারা। বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম তার ইশতেহার ঘোষণা করেননি। ভোট নির্ধারণের পর জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় ও দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তিনি ইশতেহার ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদের পর ২৮ জুনের এক-দুদিন আগে ভোট হতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন মেয়র, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা। শনিবার ছুটির দিন থাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ প্রচার চালাননি। তবে উঠানবৈঠকসহ নানা সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। নির্বাচনের নতুন দিনক্ষণ ঘোষণায় কাউন্সিলর প্রার্থীরা খুশি হলেও নির্বাচনে তাদের খরচের বিষয়টি সামনে এলে অনেকের মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের আদেশের পর প্রধান দুই মেয়রপ্রার্থীসহ অপর মেয়রপ্রার্থী, কাউন্সিলরা নড়েচড়ে বসেছেন। নতুন উদ্যমে, নতুন পরিকল্পনা করছেন দুই প্রধান মেয়রপ্রার্থী।

শনিবার দিনব্যাপী মহানগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে জমায়েত কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

নির্বাচনে প্রচার, এলাকার সমস্যা, মেরুকরণসহ নানা দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি কর্মী-সমর্থকদের কর্মপন্থা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া কর্মী-সমর্থকদের সংগঠিত ও নতুন উদ্যমে কাজ করার জন্য তাদের পরামর্শ দিচ্ছেন প্রার্থীরা।

শনিবার ছুটির দিন থাকায় আওয়ামী লীগ মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ছয়দানায় তার নিজ বাসভবনে সময় কাটান। এ সময় আগত নেতাকর্মীর সঙ্গে দফায়-দফায় বৈঠক করেন। এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমাদের মাঠের কাজ ৯০ শতাংশ গুছিয়ে নিয়েছিলাম। মামলার জটিলতার কারণে অনেক পিছিয়ে গেছি। আবার নতুন করে মাঠ গোছাতে হবে, যেতে হবে দ্বারে দ্বারে।
এদিকে শনিবার সকালে সংবাদকর্মীরা ছাড়াও হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। এ সময় হাসান উদ্দিন বলেন, ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার ঠেকাতে নির্বাচনী কার্যক্রমের প্রথম থেকেই নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৬ মে নির্বাচন স্থগিতের পর কথিত ‘গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের’ সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে আড়াই শতাধিক নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাসান সরকার এ যাবৎ গ্রেপ্তার ২০-দলীয় জোটের সব নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, এসব অন্যায় আর সহ্য করা হবে না। আইনি লড়াই এখনো শেষ হয়নি। মাঠের লড়াইয়ের পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাব। গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করলে আবার উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৭ মেয়র, ২৫৫ সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। সূত্র: আমাদের সময়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here