ভারতের মুম্বাইয়ে হিন্দি ছবির শুটিং শেষে কিছুদিন আগে ঢাকায় ফিরেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা সিমলা। বুধবার সকালে এই নায়িকা জানান, নতুন একটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবিকে নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করবেন পরিচালক শহীদুল হক খান। নতুন ছবির পাশাপাশি জানালেন চলচ্চিত্র নিয়ে তাঁর কিছু ক্ষোভের কথা।

অনেক দিন পর দেশের চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হলেন?
হ্যাঁ, আমাকে তো কেউ কাজে নেয় না। তবে এবার অনেক দিন পর সুন্দর একটি গল্পের ছবিতে অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। কদিন আগে মুম্বাইয়ে একটি ছবির শুটিং শেষ করেছি। ঢাকায় ফেরার পর পরিচালক শহীদুল হক খান আমাকে ফোন করে বললেন, আপনার শিডিউলের কী অবস্থা? আমি বললাম, শিডিউল আছে। এরপর গল্প শুনে পছন্দ হওয়ায় কাজটি করতে রাজি হয়ে যাই। শুটিংয়ের দিন-তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার ছবিটির মহরত হয়েছে। ছবির নাম ‘কাঁকন বিবি’।

‘কাঁকন বিবি’ ছবিতে কাজ করার জন্য কেমন প্রস্তুতি নিতে হবে?
এমন একটি ছবিতে অভিনয় করব, তা কখনোই ভাবিনি। এটা আমার ভাগ্য যে কাঁকন বিবি চরিত্রে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। কাঁকন বিবির মতো চরিত্রের জন্য একজন অভিনেত্রীকে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। এই ছবিতে আমি তিন রূপে দর্শকদের সামনে হাজির হব। চরিত্রটি নিয়ে গবেষণা করছি। কিশোরী আর যুবতীদের আচরণ আমার জানা, বয়স্কদের আচরণ জানি। কিন্তু এরপরও সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এর আগে অনেক ছবি দেখেছি, কিন্তু এই ছবির চরিত্র আর গল্প একেবারেই অন্য রকম মনে হচ্ছে।

আপনার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ছবি কোনটি?
‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’। মাসুদ পথিকের এই ছবিতে আমার চরিত্রটি ছিল খুব চমৎকার। নির্মলেন্দু গুণের কবিতা থেকে ছবির চিত্রনাট্য করা হয়েছে। আমার সহশিল্পী ছিলেন জুয়েল, তিনি থিয়েটার করেন। আমার চরিত্রের নাম ফাতেমা। এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা একটি কাজ। ছবিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে কয়েকটি বিভাগে পুরস্কার জিতেছে।

সিমলা
সিমলা
বলিউডে যে ছবির কাজ করেছেন, সে ছবি নিয়ে বলুন।
ছবির নাম ‘সফর’। আমার অংশের শুটিং শেষ, ডাবিংয়ের কাজ বাকি আছে। আমার চরিত্রটি খুব চ্যালেঞ্জিং। এই ছবিতে আমার চরিত্রটি স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া একটি মেয়ের। ছয় মাস পর আবার স্মৃতিশক্তি ফিরে পায়। মেয়েটা কথা বলে কম, অভিব্যক্তি দিয়ে অনেক কিছু বোঝাতে হয়। অভিনয়ের অনেক সুযোগ ছিল। মেয়েটার ওপরই গল্প।

এবারই প্রথম বলিউডের ছবিতে কাজ করেছেন। কেমন লেগেছে?
চলচ্চিত্রের এত বড় বাজারের ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, এটা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পীদের জন্য সম্মানের। ইউনিটের সবাই আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তা ছাড়া শুটিংয়ের আগে তিন মাস হিন্দি ভাষার ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন অর্পণ রায় চৌধুরী। তিনি ভারতের একজন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা। এটি তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি।

বলছিলেন, আপনাকে কাজে নেয় না। কেন?
জানি না। অনেক ভেবেছি, জানার চেষ্টা করেছি, কেন আমাকে কাজে নেওয়া হয় না। কোনো উত্তর খুঁজে পাইনি। আমার যেভাবে কাজ করার কথা, যে অবস্থানে থাকার কথা, সেখানে আমি নেই। একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমি কী করতে পেরেছি, যাঁরা আমার ছবি দেখেছেন, সেই দর্শকেরা তা ভালো বলতে পারবেন। কাজের ব্যাপারে আমি কতটা সিনসিয়ার, যে পরিচালকদের ছবিতে কাজ করেছি, তাঁরা খুব ভালো করেই জানেন। নামী কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তাঁরা বলতে পারেননি, আমি সিমলা কখনো নির্ধারিত সময়ের পরে সেটে গেছি।

তাহলে গ্যাপটা কোথায়?
জানি না। যাঁরা আমাকে নেন না, নিতে চান না—তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন।
সুত্র: প্রথম আলো

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here