চার বছর ধরে শ্যালিকা বৃষ্টি সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন দুলাভাই সুমন । বিষয়টি জানাজানির পর পারিবরিকভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা করলে বোনের সংসার বাঁচাতে সুমনের কাছ থেকে দূরে সরতে থাকেন বৃষ্টি। আর সেই ক্ষোভ থেকেই বৃষ্টিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন দুলাভাই সুমন। ঘটনার দিন সুমন বৃষ্টিকে হুমকি দেয় যে, তার সাথে বৃষ্টির ঘনিষ্ট সম্পর্কের অনেক ছবি এবং ভিডিও রয়েছে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত ফয়সালার জন্য সুমন বৃষ্টিকে বৈকালী হোটেলে নিয়ে যায় ।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানিয়েছেন র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল এমরানুল হাসান । তিনি জানান, মগবাজারের বৈকালি আবাসিক আবাসিক হোটেলে চাঞ্চল্যকর বৃষ্টি (১৬) হত্যা মামলার একমাত্র আসামি সুমনকে (২৯) আটকের পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মঙ্গলবার রাতে মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকা থেকে সুমনকে আটক করে র‌্যাব-৩। ওই সময় আত্মগোপনে থেকে সুমন ঢাকা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব। গ্রেফতার সুমন হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করেছেন জানিয়ে

র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, আসামি সুমন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালক। ২০১০ সালে ভিকটিম বৃষ্টির মেজো বোন হাসনার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। গত তিন চার বছর ধরে তিনি তার শ্যালিকাকে উত্যক্ত করতেন এবং এক পর্যায়ে সেটা অনৈতিক সম্পর্কে গড়ায়। ‘পরে বিষয়টি পারিবারিকভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয় এবং বোনের সংসার বাঁচাতে বৃষ্টি ধীরে ধীরে সুমনের কাছ থেকে দূরে সরে আসতে থাকেন। এ ঘটনা সুমনের মনে প্রচ- ক্ষোভের সৃষ্টি করে।’

র‌্যাব কর্মকর্তা এমরানুল বলেন, বৃষ্টি মহাখালী সাততলা বস্তিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। গত ১৬ জুলাই নিজেদের মধ্যে চূড়ান্ত ফয়সালা করতে সুমন মগবাজারের একটি হোটেলে বৃষ্টিকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে রুম ভাড়া নেন। ‘ওই সময় তাদের নিজেদের আগের বিষয়গুলো নিয়ে প্রচ- ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সুমন জোর করে বৃষ্টির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চাইলে বৃষ্টি রাজি না হওয়ায় সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ওড়নার একাংশ গলায় পেচিয়ে ও অন্য অংশ হোটেলের ফ্যানের সঙ্গে বেঁধে পালিয়ে যায় সুমন ।

গত সোমবার মগবাজারের বৈকালী হোটেল থেকে বৃষ্টির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত বৃষ্টির বাবা মো. আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সুমনকে আসামী করে রমনা থানায় মামলা করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here