জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের আইন ভিত্তি পেলে এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। নির্বাচনী আইন (আরপিও) সংশোধনের পর যদি কমিশন ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন চূড়ান্ত হবে কতটি আসনে এর ব্যবহার হবে।
আজ মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ এ কথা বলেন। সচিব বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কখনো ইভিএম ব্যবহার হয় আবার কখনো হয় না। তবে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের আইনি ভিত্তি নেই। আরপিও সংশোধনীর মাধ্যমে এটি আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর ব্যবহার হবে কি না।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, এ পর্যন্ত ৩৮০টি ইভিএম কেনা হয়েছে। কমিশন দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা করেছে। এটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন অনুমোদন করলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দেড় লাখ ইভিএমে এক-তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ১০০ আসনে ভোট নেওয়া যাবে। তবে প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের একমত হওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় আছে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হয়নি।। কমিশন যখন মনে করবে আইনগত ভিত্তি পেল, প্রকল্প অনুমোদন হলো তখন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে।

হেলালুদ্দীন বলেন, ‘এসব বিষয় আসলে এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আগে একটা আরপিও সংশোধনের বিষয় আছে। আইনগত ভিত্তি পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ আগামী নির্বাচনের আগে এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব কি না-এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নির্ভার করছে সকল পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে যখন কাজটা শুরু করব, প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করতে পারব। এসব নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। ফলে কতটা কেন্দ্রে হবে, তা এখনো আলোচনা হয়নি। অনেকগুলো পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হতে হবে। এ কমিশনের একার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

সচিব বলেন, জাতীয় নির্বাচনের ৮০ ভাগ প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ৩০০ আসনের পুনর্বিন্যাস হয়েছে। ভোটার তালিকা শেষ হয়েছে। প্রায় ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্র হবে। কেন্দ্রের তালিকা ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আসবে। দ্বিতীয় সপ্তাহে গেজেট করা হবে।

নির্বাচন কবে এই প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, গতবার ৫ জানুয়ারি হয়েছিল। এবারের পরিকল্পনা হলো ডিসেম্বরের মধ্যে করা। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে। মাসের শেষ দিকে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত আছে সকল ধরনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার। সিটি, পৌর, জেলা, উপজেলায় ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা সরকারের আছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে ইভিএম ব্যবহার করে বেশ সফলতা পাওয়া গেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেগুলোতে ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা আছে। সারা বছর ধরে কোনো না কোনো জায়গায় পৌরসভা, জেলা পরিষদের নির্বাচন হয়ে থাকে তখনো ইভিএম ব্যবহারের পরিকল্পনা আছে। সেটাকে মাথায় রেখেই যদি সকল পক্ষ একমত হয়, তাহলে জাতীয় সংসদেও ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা নির্বাচন কমিশনের আছে। এখন থেকে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। যারা ভোটার তাদের সম্পৃক্ত করে ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।

ইভিএমে ব্যাপারে উৎসাহিত করতে ঢাকাতে ইভিএম মেলা হবে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ভোটারদের আগ্রহী করা হবে। ইসির ১০টি অঞ্চল আছে। ১০টি অঞ্চলে মেলা হবে।

সচিব বলেন, গত ২৬ তারিখ কমিশন সভা করেছে। যেখানে আইন বিধিবিধান কমিটির সুপারিশ পাওয়া গেছে। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী ৩০ তারিখ ইভিএমের জন্য আরপিওতে যে ধারাগুলো সংযোজন করতে হবে এগুলো নিয়ে আরেকটি সভা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হতে পারে ইভিএম আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য সংযোজন হবে কি হবে না। যদি আরপিওতে এটা সংযোজন হয় তাহলে প্রস্তুতি লাগবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here