পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরে আবারো ভেঙে পড়েছে উড়ালসেতু। এবার দক্ষিণ কলকাতার মাঝেরহাট উড়ালসেতুর একাংশ ভেঙে পড়ে। ওই দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। আহতের সংখ্যা নয়জন। আহতদের মধ্যে অধিকাংশের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৪টা ৩৫-এর মধ্যে ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট উড়ালসেতুর একটি অংশ। এই উড়ালসেতুর নিচে আছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার রেললাইন। উড়ালসেতু ভেঙে পড়ায় বন্ধ আছে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বজবজ লাইনের রেল চলাচল। সন্ধ্যা পর্যন্ত ভেঙেপড়া উড়ালপুলের তলায় চাপা পড়ে আছে বেশ কয়েকটি গাড়ি, একটি মিনিবাস এবং একাধিক মোটরসাইকেল। ঘটনাস্থলে রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। উদ্ধারকাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। উদ্ধারকাজ তদারকিতে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার সুরজিত পুরকায়স্থ ও কলকাতার মেয়র শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। উদ্ধারকাজে হাত দিয়েছে সেনাবাহিনীও।

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে কলকাতাজুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়। সেই বৃষ্টি থামতে না থামতেই দক্ষিণ কলকাতার তারাতলা ও মোমেনপুরের মধ্যে সংযোগকারী অন্যতম এই উড়ালসেতুটি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। জানা যায়, এই উড়ালসেতুটি যে জায়গায় ভেঙে পড়েছে তার নিচে ছিল স্থানীয় মেট্রো রেল প্রকল্পের নির্মাণ শ্রমিকদের একটি ঘর। সেখানে সাধারণত শ্রমিকরা বিশ্রাম করেন।

এরইমধ্যে ভেঙে পড়া উড়ালসেতুর নিচ থেকে ২০-২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সন্ধ্যা নেমে আসায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। রাতভর উদ্ধারকাজ চালানোর জন্য আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিয়ে আসা হয়েছে ক্রেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে প্রচণ্ড শব্দ করে ভেঙে পড়ে উড়ালসেতুটি। মুহূর্তের মধ্যে উড়ালসেতুর ওপর থেকে ছিটকে পড়ে যানবাহন। উড়ালসেতুটির প্রায় ১০০ মিটার অংশ ভেঙে পড়েছে বলে জানা যায়।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং সফরে আছেন। এই ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি এখনই দার্জিলিং থেকে কলকাতায় ফিরতে চাইছি। কিন্তু এখান থেকে কোনো বিমান পাচ্ছি না। তবে দার্জিলিং থেকেই আমি পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। উদ্ধারকাজে যাতে কোনোরকম গাফিলতি না হয় তার জন্য সব নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

কলকাতার পোস্তায় উড়ালসেতু ভেঙে পড়ার পর আবার মাঝেরহাট উড়াল সেতু ভেঙে পড়ায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here