আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে নারী ক্যাডেট ভর্তি না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে থাইল্যান্ডের রয়েল পুলিশ ক্যাডেট অ্যাকাডেমি। অনলাইনে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তবে কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি৷ পুলিশ বিভাগের এক মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি৷

শত বছরের পুরনো এই পুলিশ অ্যাকাডেমিতে ২০০৯ সাল থেকে নারী ক্যাডেট নেয়া শুরু হয়েছিল৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ জন নারী সেখান থেকে পাস করে বের হয়েছেন৷

নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, অ্যাকাডেমির সিদ্ধান্ত যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যেতে থাই মেয়েদের নিরুৎসাহী করে তুলতে পারে৷

এটিকে ‘থাইল্যান্ডে নারী নিরাপত্তা ও নারীর অধিকারের ক্ষেত্রে এটি একটি পশ্চাৎপদ সিদ্ধান্ত’ বলে মনে করেন মানবাধিকার সংস্থা ‘ওমেন অ্যান্ড মেন প্রোগ্রেসিভ মুভমেন্ট’ এর পরিচালক জাদেত চাউয়িলাই৷

তিনি বলেন, ‘কোনো নারী পুলিশ কর্মকর্তা না থাকলে পারিবারিক সহিংসতা, হয়রানি ও যৌন নিপীড়নের শিকার নারীরা হয়রানির ভয়ে পুলিশের কাছে যাওয়া কমিয়ে দেবে’৷

জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইউএন ওমেন’-এর গত বছরের এক প্রতিবেদন বলছে, থাইল্যান্ডে প্রায় ৯০ শতাংশের মতো ধর্ষণের ঘটনা অপ্রকাশিত থাকে৷

জার্মানির ফাউন্ডেশন ‘ফ্রিডরিশ-এবার্ট-স্টিফটুং’-এর থাইল্যান্ড শাখার হিসেবে, থাইল্যান্ডে প্রতিবছর ২০ হাজারের বেশি নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে খুব কম ঘটনাই প্রকাশ পায়৷ সমস্যার সমাধানে জার্মান ঐ ফাউন্ডেশন থাই পুলিশে নারী সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল, যেন প্রতি থানায় একজন করে নারী পুলিশ নিয়োগ দেয়া যায়৷

উল্লেখ্য, দেশটিতে বিদ্যমান ধর্ষণ মামলার আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের শিকার নারীর সাক্ষাৎকার নেয়ার কথা একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার৷

এই বাস্তবতায় থাইল্যান্ডের আরেকটি মানবাধিকার সংস্থা ‘ফাউন্ডেশন ফর ওমেন’-এর পরিচালক উসা লার্ডসরিসুন্টাড বলেন, ‘এটা লিঙ্গ বৈষম্য৷ এমনিতেই নারী পুলিশ কর্মকর্তার সংখ্যা খুবই কম৷ এই সিদ্ধান্তের কারণে তা আরও কমে যাবে’৷

বিশ্বব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের মোট জনশক্তির ৪৫ শতাংশ নারী৷ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই হার কয়েকটি শীর্ষ দেশের মধ্যে একটি৷ কিন্তু পুলিশ বিভাগে নারী কর্মীর সংখ্যা কম৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here