দুবার রানারআপ হলেও কখনোই শিরোপা জেতা হয়নি বাংলাদেশের। মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের সবাই কম-বেশি দেশ ছাড়ার আগে বলে গেছেন শিরোপা জয়ের লক্ষ্যের কথা। আর বাংলাদেশের এই লক্ষ্যটাকে যথেষ্ট যৌক্তিক বলেই মনে করছেন সাবেক পাকিস্তানি গ্রেট জহির আব্বাস।
তিনি মনে করেন, পাকিস্তান, ভারত কিংবা শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেরও এশিয়া কাপ জয়ের সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান কিংবা ভারত বাদে এই টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কাও চাইলে নিজেদের সুযোগটা কাজে লাগাতে পারে। তবে, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের পক্ষে চমকে দেওয়া সম্ভব। তারা অনেক উন্নতি করা একটা দল। ওদের এই ইভেন্টে ভাল করার যথেষ্ট সুযোগ আমি দেখছি।’

তবে, জহির আব্বাস মনে করছেন, এই আসরে যে কোনো দলের জন্যই এবার এশিয়া কাপে পাকিস্তানকে আটকানো কঠিন হবে। পাকিস্তানের পরেই তিনি ফেভারিটের তালিকায় রাখছেন ভারতকে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান এখন যেমন ক্রিকেট খেলছে, তাতে ওদেরই ফেভারিট বলতে হয়। এরপরেই থাকবে ভারত। টুর্নামেন্টটা এই দুটো দলের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের একটা মঞ্চ হয়ে উঠতে পারে।’

যদিও ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির সাবেক এই সভাপতি মনে করেন, বাকি প্রতিপক্ষদের হালকা করে দেখলে পাকিস্তান বিপদে পড়তে পারে। তিনি বলেন, ‘সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে কোনো দলই নিজেদের দিনে চমকে দিতে পারে। তবে, ‘জিতেই গেছি’ মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামলে পাকিস্তান দল বিপদে পড়তে পারে।

আগামীকাল সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরু হবে এশিয়া কাপের আসর। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ চান্দিকা হাতুরুসিংহের দল শ্রীলঙ্কা। এর পরদিনই বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপের মিশন শুরু করবে পাকিস্তান।

হংকংয়ের ম্যাচ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা দেখছেন না জহির আব্বাস। তবে, তার সকল নজর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। দুবাইয়ে দুটি দল মুখোমুখি হবে ১৯ সেপ্টেম্বর। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়না হংকং দলটা পাকিস্তানের জন্য ঝুঁকির কারণ হবে। তবে, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে কে না পছন্দ করে। ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তানের মতো হাই-ভোল্টেজ ম্যাচ আর নেই।’

এর আগে সর্বশেষ দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল গেল বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে। সেবার ফেভারিট ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তান। এশিয়া কাপের পরিসংখ্যানে অবশ্য এগিয়ে ভারত। ছয়বার এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে তারা। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা পাঁচবার ও পাকিস্তান দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তবে, এবার ভারতের সাথে ব্যবধান কমিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে পাকিস্তানের। কারণ, স্বয়ং বিরাট কোহলিই যে এবার আসছেন না। জহির আব্বাসও মনে করেন কোহলির অনুপস্থিতিটাই ম্যাচে বড় ফ্যাক্টর হতে পারে।

পাকিস্তানের হয়ে ৭৮টি টেস্ট ও ৬২টি ওয়ানডে খেলা আব্বাস বলেন, ‘কোহলি বড় একজন ম্যাচ উইনার। অবশ্যই ওর অনুপস্থিতি টুর্নামেন্টে ভোগাতে পারে পাকিস্তানকে। তবে, এটাও ঠিক যে ভারতীয় দলে ভাল ওয়ানডে খেলতে জানা বিস্তর ক্রিকেটার আছেন।’

জহির আব্বাস আলাদা করে নজর রাখছেন পাকিস্তানের ওপেনার ফখর জামানের দিকে। তিনি মনে করেন, ‘আপনি যদি আলাদা করে পাকিস্তানি ক্রিকেটারের নাম বলতে বলেন, যে এশিয়া কাপে জ্বলে উঠতে পারে, তাহলে আমি ফখর জামানের নাম বলবো। ও এখন দারুণ ফর্মে আছে। আর এটা যদি ধরে রাখতে পারে তাহলে পাকিস্তানকে আটকানো বাকি দলগুলোর জন্য বেশ কষ্টকরই হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here