রোহিঙ্গাদের টেকসই স্বদেশ প্রত্যাবাসনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগে মুসলিম উম্মার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিষয়ে ওআইসি কন্টাক্ট গ্রুপের এক সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসস’র।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের টেকসই স্বদেশ প্রত্যাবাসনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি এবং তাদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার জবাবদিহিতা নিশ্চিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বৃদ্ধির প্রচারণায় নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমি মুসলিম উম্মার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সৌদি আরবের স্থায়ী মিশন এবং ওআইসি সচিবালয় যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে। সভায় ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসেফ আল ওথেইমীনও বক্তব্য রাখেন। সভায় শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি মোকাবিলায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও মানবাধিকার কাউন্সিলের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহসহ এবং জাতিসংঘের ব্যবস্থাপনায় ওআইসি দেশগুলোর অব্যাহতভাবে জড়িত থাকার বিষয়ে বাংলাদেশ গুরুত্বারোপ করেছে।

তিনি বলেন, ‘সর্বোপরি স্বল্পতম সময়ে আমাদের এ সমস্যার সমাধান করা আবশ্যক।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি গৃহহীন ও নিরাশ রোহিঙ্গাদের জন্য এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে গত সেপ্টেম্বরে ৫-দফা কর্মপরিকল্পনার প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, ‘পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এখনো শুরুই হয়নি।’ তবে এ বছর কতিপয় সুস্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান।

সভায় শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকটকে মিয়ানমারে গভীরভাবে প্রোথিত একটি রাজনৈতিক সঙ্কট হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘অতএব এর সমাধানও মিয়ানমারকেই খুঁজে বের করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনই কেবল এ সমস্যার একমাত্র টেকসই সমাধান নয়, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধের আগে বরং পরিস্থিতির অবনতির দুটি প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। এই প্রশ্নগুলো হচ্ছে : যৌথ দায়িত্ব ও জবাবদিহিতা এবং মিয়ানমার কর্তৃক এই রোহিঙ্গাদের অধিকার ও প্রাধিকারসমূহ নিশ্চিত করার প্রশ্ন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ এবং নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করেছে। এ কারণে রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি দীর্ঘায়িত হতে পারে না।

প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সমস্যা শুরু থেকেই বাংলাদেশ তা সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, মিয়ানমারের তরফ থেকে এক্ষেত্রে আশানুরুপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

সঙ্কট সমাধানে তাই ওআইসিকে বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখতে আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে খুঁজে বের করতে হবে সারা বিশ্বে কেন মুসলমানরা নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মুসলমানরা কেন একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। যদি কোনও সমস্যা থেকেই থাকে তবে তা দ্বিপাক্ষিক অথবা আঞ্চলিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার আহ্বান জানানি প্রধানমন্ত্রী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here