ভূমিকম্প ও সুনামির তিনদিন পর ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের ভেতর এখনও আটকে আছেন অনেকে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, দিন-রাত অভিযান চালানোর জন্য আহ্বান জানান। গত শুক্রবারের ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে অন্তত ৮৩২ জন মারা যান। আহত হন কয়েশ’ মানুষ।
দৃষ্টিসীমায় শুধুই ধ্বংসস্তূপ। পাথর, কংক্রিটের ভেতর থেকে আটকা পড়াদের বাঁচার আর্তনাদ। সাজানো গোছানো ছবির মতো সুলাওয়েসি দ্বীপটি পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে। কয়েক সেকেন্ডের একটি দুর্যোগ কেড়ে নিয়েছে সব স্বপ্ন। স্বজন হারা এই মানুষগুলোর চোখে এখন কেবলই অনিশ্চয়তার অন্ধকার।

একজন বলেন, ভূমিকম্পের পর আমি সব কিছু একটি বৃত্তের মধ্যে ঘুরতে দেখি। দ্রুত ঘরের বাইরে আমি বের হতে পারলেও, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমার মেয়েকে হারিয়েছে, সেই সঙ্গে মাথা গোজার ঠাঁইও।

দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জীবনের আশা যখন ক্ষীণ হয়ে আসছিল, ঠিক তখনই আশার আলো দেন উদ্ধারকর্মীরা। দুর্ঘটনার তিন দিন পর সোমবার ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে এক নারীকে জীবিত বের করে আনা হয়। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, পালু শহরের একটি হোটেল এবং একটি শপিং মলের ধ্বংসস্তূপের ভেতর এখনো বেশ কয়েকজন জীবিত রয়েছেন। বিধ্বস্ত বাড়িঘরের নিচ থেকে মোবাইল সিগন্যাল পাচ্ছেন তারা। বিভিন্ন পদ্ধতিতে আটকা পড়াদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।

এদিকে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো। এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, আমরা খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়েছে। বিমান চলাচল বন্ধ। এ কারণে ত্রাণ তৎপরতা চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তবুও ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যত দ্রুত সম্ভব, এখানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা হবে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে, বিরতি ছাড়াই দিন-রাত অভিযান চালানোর জন্য উদ্ধারকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ইন্দোনেশীয় প্রেসিডেন্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here