২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ আসামির ট্রিপল (তিনবার) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২০খ ধারার অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ৩০২ ধারার হত্যার পরিকল্পনা করে যাবজ্জীবন এবং ৩০৭ ধারার হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা করে যাবজ্জীবন এবং বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের ৩ ও ৬ ধারায় বিস্ফোরক (গ্রেনেড) দ্বারা মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে তাদের তিনবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান এর আগে আরও দুটি মামলায় ১০ ও ৭ বছর কারাণ্ডে দণ্ডিত হয়ে আছেন।

সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানের ১০ বছর কারাদন্ড এবং ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান। ওই রায়ে তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের একই দণ্ড এবং মা খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।

অন্যদিকে অর্থপাচারের একটি মামলায় ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর বিএনপির এ নেতাকে খালাস দেন ঢাকার তৎকালীন ৩ নম্বর বিশেষ জজ মো. মোতাহার হোসেন। তবে ওই রায়ে তার বন্ধু মামুনের ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ কোটি টাকা জরিমানা করেন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আপিল করলে ২০১৬ সালের ২০ জুলাই হাইকোর্ট তারেক রহমানের খালাসের রায় বাতিল করে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানার রায় দেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ ছিল, ২০০৪ সালে বিএনপিসহ ৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে শেখ হাসিনার ওপর সহজে আক্রমণ চালানোর সুযোগ থাকায় মুফতি হান্নানসহ জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদের সদস্যরা কুমিল্লার মুরাদনগরের এমপি মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সহযোগিতায় ২০০৪ সালের প্রথম দিকে বনানীতে ‘হাওয়া ভবন’ গিয়ে তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে পরিচিত হয় এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যাসহ তাদের বিভিন্ন কাজকর্মে সহযোগিতা চায়।

তারেক জিয়া উপস্থিত সবার সামনে তাদের কাজকর্মে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে মুফতি হান্নান ২০০৪ সালের আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে একদিন মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা তাজউদ্দিনসহ এনজিও সংগঠন আল-মারকাজুল ইসলামের অফিসে সমবেত হয়ে আল মারকাজুল ইসলামের একটি মাইক্রোবাসযোগে আল মারকাজুল মাওলানা আবদুর রশিদকে সঙ্গে নিয়ে হাওয়া ভবনে যায়।

সেখানে তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, হারিছ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, তৎকালীন এনএসআইর ডিজি ব্রিগেডিয়ার আবদুর রহিম, তৎকালীন সিআইডির ডাইরেক্টর ব্রিগেডিয়ার (পরে মেজর জেনারেল) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে ষড়যন্ত্রমূলক মিটিং করে এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হামলা করে হত্যা করার সহযোগিতা চায়। তারেক জিয়া সবার সামনে মুফতি হান্নান ও তার সহযোগীদের সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বাসায় মিটিং হয় এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে।

সুত্র: আমাদের সময়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here