নাঈমা খান জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত মনোনীত

0
886

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্কে মানসম্মত শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নের পথ বেয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ তথা এসডিজি অর্জনের পথ সুগম করার অভিপ্রায়ে কমিউনিটির পরিচিত প্রতিষ্ঠান খান’স টিউটোরিয়াল-এর চেয়ারপার্সন নাঈমা খানকে ‘জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস অব মিডিয়ার নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদের কো-চেয়ার ড. আমিন ক্রুজ গত ১৫ অক্টোবর এ নিয়োগের আদেশ প্রদান করেন। নাঈমা খান তিন বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন। গত ১৯ অক্টোবর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে এ নিযুক্তির সার্টিফিকেট আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে হস্তান্তর করা হয়। এসময় ইউএস সিনেটর বব বেমেন্ডেজ (নিউজার্সি), নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান আদ্রিয়ানো এসপাইলেট, নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টের জজ কারমেন ভেরাজকুয়েজ এবং খানস টিউটোরিয়াল-এর সিইও ডা. ইভান খান উপস্থিত ছিলেন।


‘জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত’ মনোনীত হওয়ার পর নাঈমা খান তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শিক্ষার উন্নয়নে তার ভূমিকা রাখার রূপরেখা তুলে ধরেন। এদিকে জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত বা গুড উইল এম্বেসেডর-এর মতো বিরল এই সম্মানের খবরে কমিউনিটির অনেকেই নাঈমা খান-কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ২১ অক্টোবর রোববার সকালে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা। লন্ডন থেকে শেখ রেহানা তাকে ফোনে অভিনন্দন জানান বলে নাঈমা খান জানান। এ সময় শেখ রেহানা বলেছেন, এটা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত খুশীর খবর। প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশে-বিদেশে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে আপনার এই খবরটি অন্যতম, আপনাকে অভিনন্দন। শেখ রেহানা নাইমা খানের সাথে প্রায় আধঘন্টা কথা বলেন বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, শেখ রেহানা এবং নাঈমা খান দু’জনই সহপাঠি এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু।


জানা গেছে, জাতিসংঘের ‘শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবে নাঈমা খান আগামী ৩ বছর মর্যাদাসম্পন্ন শিক্ষা প্রসারের নানা কর্মসূচি নিয়ে বিভিন্ন দেশে সভা-সিম্পোজিয়াম করবেন। উল্লেখ্য, এসডিজি অর্জনের ১৭টি বিষয়ের মধ্যে চতুর্থতম হচ্ছে শিক্ষা। জাতিসংঘের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে থাকে। জাতিসংঘের সাসটেইনেবল গোল অর্থাৎ ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য’ কর্মসূচী বাস্তবায়নের কাজ করছে ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস অব মিডিয়া এবং হিস্পানিক-আমেরিকান কংগ্রেস অব প্রেস।
এদিকে সম্মানজনক ‘জাতিসংঘের শুভেচ্ছা দূত’ নিযুক্ত হওয়ায় নাঈমা খান তার এই বিশেষ সম্মানের জন্যে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, স্কুলগামী সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় নিষ্ঠার সাথে দিক-নির্দেশনা প্রদানের জন্যে সকল অভিভাবকের আস্থা তৈরী হবার পরিপ্রেক্ষিতে এমন একটি বিরল দায়িত্ব পাওয়া বড় সম্মানের। এর মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে বাংলাদেশের মুখই উজ্জ্বল হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত: আরো উল্লেখ্য যে, নিউইয়র্কে স্বল্প আয়ের বাংলাদেশীসহ অভিবাসী সমাজের সন্তানদের নিউইয়র্কের স্পেশালাইজড স্কুলগুলোতে ভর্তির উপযোগী কোর্স প্রদানের মধ্য দিয়ে ‘খান’স টিউটোরিয়াল’ গত দুই দশক ধরে কমিউনিটি সহ নিউইয়র্কের বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মরহুম ড. মনসুর খান। তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় একুশে পদক (শিক্ষা) পেয়েছিলেন। নিউইয়র্কে সিটিতে বর্তমানে ‘খান’স টিউটোরিয়াল’ ১১টি শাখা চালু রয়েছে।
নাঈমা খান ঢাকা ও রাশিয়ায় (অভিভক্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন) লেখাপড়া শেষে করে দেশে ফিরে স্বকালীন সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৫ সালে স্বামী ড. মনসুর খান এবং একমাত্র পুত্র ইভান খানকে সাথে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী হন এবং নিউইয়র্কে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। ১৯৮৮ সাল থেকে তিনি নিউইয়র্ক সিটির সার্টিফাইড এলিমেন্টারী স্কুল শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং শিক্ষকতার পাশাপাশি নিউ স্কুল ইউনিভার্সিটি থেকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স ডিগ্রিী সম্পন্ন করেন। ১৯৯৫ সালে ড. মনসুর খান ‘খানস টিউটিরোরিয়াল’ প্রতিষ্ঠার সময় সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন এবং বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করছেন। নাঈমা খান তার নানা কর্মকান্ডের জন্য ব্যক্তিগতভাবে ইউএস কংগ্রেস, নিউইয়র্ক ষ্টেট ও সিটি, নাসাও কাউন্টি, ব্রঙ্কস বরোর একাধিক জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সম্মাননা ছাড়াও ইউনেস্কো সম্মাননা ও ড্যানি গ্রোভার সম্মাননা লাভ করেছেন। ইউএনএ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here