ফকির সেলিম
ভোর সাড়ে ছয়টা। অনুকে বললাম বহুদিন পর আজ ঊষার লগ্ন দেখবো আমরা। অন্ধকার কাটতে শুরু করেছে। শহর থেকে বেরিয়ে আবার হাইওয়েতে উঠলাম। গাড়ীর গতি ৮০/৮৫ মাইল।
রাস্তার দুপাশে বিশাল বিশাল পাথুরে পাহাড়। সমতল থেকে পাহাড়গুলোর সঠিক উচ্চতা জানিনা। আলো আঁধারের ঊষার লগ্নে তা বোঝাও কঠিন। তবে আমি নিশ্চিত হাজার ফুটের বেশী হবে প্রতিটা পাহাড়। মাটি থেকে আকাশ পর্যন্ত উঁচু তারা। একটি পাহাড়েরও মাথা দেখা যাচ্ছে না। ওপরের অংশ মেঘে ঢাকা।
ভোরের আলো ফুটছে আর অন্তর প্রফুল্ল হচ্ছে। কোথায় ঘুম কোথায় কি। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে প্রান মন আপ্লুত হয়ে আছে। এমন অপূর্ব সুন্দর ঊষার লগ্ন বহু বহু বছর পর উপভোগ করছি।
পরিচ্ছন্ন নির্মল আকাশের পূর্ব গগন থেকে সূর্যের লাল আভা পাহাড়ের গায়ে আছড়ে পড়ছে। সেই মোহনীয় আলোয় আলোকিত হচ্ছে ভূবন। জেগে উঠছে প্রান ও প্রকৃতি। আমার আর ঝিম নেই তন্দ্রা নেই। পাহাড়ী আঁকা বাঁকা রাস্তায় গাড়ী ৮৫ মাইলে ক্রুজ কন্ট্রোল দিয়ে চালাচ্ছি। এই সৌন্দর্য অবলোকন থেকে একটা মুহুর্তও নস্ট করতে চাইনা।
পাহাড়ের পাথুরে মাটি ফুঁড়ে কি আশ্চর্য সুন্দরভাবে বেড়ে উঠেছে নাম না জানা বৃক্ষরাজি, সবুজ লতাগুল্ম। শরতের আহবানে পাতাগুলো রং বদলাচ্ছে। সবুজ হলুদ আর লাল পাহাড়গুলোর ওপর ভোরের সূর্য রশ্মির মাখামাখিতে এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃস্টি হয়েছে। সে দৃশ্য বর্ননা করা কঠিন। রং এর এমন মোহনীয় কারুকার্য কোনো শিল্পীর তুলিতে সৃস্টি করা সম্ভব কিনা জানিনা।