প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপ ব্যর্থ হওয়ার পটভূমিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আন্দোলনের পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা চাচ্ছেন-ধাপে ধাপে আন্দোলনের গতি বাড়াতে। সামনের দিনগুলোতে জনসভা, রোডমার্চ, পদযাত্রার পর ঘেরাও অবরোধসহ বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে। আজ তফসিল ঘোষণার পর ফ্রন্টের নেতারা রাজপথে সক্রিয়তা বাড়াবেন। তারা মনে করছেন, তফসিল ঘোষণার পর আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। ফলে গ্রেফতার-মামলা-হয়রানি কম হবে। গতকাল বুধবার ঢাকা থেকে বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. শাহাদত হোসেনকে পুলিশ আটক করার পর কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে গ্রেফতার শংকা বাড়ে। ফলে গ্রেফতার এড়াতে আজ রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। রাজশাহীর পরের কর্মসূচি হলো, খুলনায় জনসভা। সেখানে তারা রোডমার্চ করে যাবেন। তারপরও দাবি না মানলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে পদযাত্রা করা হবে। এরপর বাড়বে কর্মসূচির মাত্রা। এদিকে আগামীকাল রাজশাহী আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে ঐক্যফ্রন্টের জনসভা হবে। সেখানে ফ্রন্টের প্রধান ড.কামাল হোসেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, কর্নেল (অব.) অলি আহম্মেদসহ নেতারা বক্তব্য রাখবেন।

গতকাল রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ফ্রন্টের নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, আজ বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার তারিখ রয়েছে, তফসিল ঘোষণা হলে আমরা আমাদের রোড মার্চের সিদ্ধান্ত নেব। আপাতত: রোডমার্চ স্থগিত। রাজশাহীতে জনসভা যথাসময়ে হবে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বলেছেন, রাস্তা বন্ধ করবে না, মাঠে সমাবেশ করুন কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা শেষে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাস্তবে প্রধানমন্ত্রী বলেন একরকম, তার নিচের লোকেরা কাজকর্ম করেন আরেকরকম। গাড়ি চলছে উল্টোপথে, দেশ চলছে উল্টোপথে। এই পথ সামনে সোজা করা হবে। দেশে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য ঐক্যফ্রন্টের আন্দোলন চলবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ তফসিল ঘোষণা ও যেসব জেলার উপর দিয়ে রোডমার্চ যাবে সেখানকার নেতাকর্মীদের মামলা, গ্রেফতার হওয়ার বিষয়গুলোর কারণেই মূলত আজকের রোডমার্চ স্থগিত করেছি। তিনি বলেন, দু দফা সংলাপে মূল বিষয়গুলোতে কোনো ফলাফল পাইনি, আবারও আলোচনার কথা বলেছি। দেখা যাক কী হয়?

এদিকে গতকাল সংলাপ শেষে বিকালে ড.কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্রন্টের নেতারা আন্দোলনের যাওয়া ঘোষণা দেন।

রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশ করার অনুমতি পেল ঐক্যফ্রন্ট

রাজশাহী থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার আনিসুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি পেয়েছে নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আলিয়া মাদ্রাসায় দুপুর ২টা থেকে সমাবেশ করার জন্য রাজশাহী মেট্টোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) তাদের অনুমতি দিয়েছে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু জানান, রোডমার্চ স্থগিত হওয়ায় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বিমানে এবং সড়কপথে রাজশাহী পৌছাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here