এই নির্বাচন প্রহসনের নির্বাচন, আমি এ কথা আপনাদের কয়েকদিন ধরে বলে আসছি। কারণ এখন নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। গত কয়েকদিন ধরে আমাদের শীর্ষ নেতা ও প্রার্থীদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে যে রাষ্ট্রযন্ত্রের পুরোপুরি প্রশ্রয়ে কাজগুলো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়িতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন। নিজের নির্বাচনী এলাকা ঠাকুরগাঁও-১ আসনে প্রচারণার জন্য জেলা সফরে আসেন ফখরুল।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি’র অফিস ভাংচুর করে আবার বিএনপি নেতাকর্মীদের নামেই মামলা হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তারা নির্বাচন করতে গেলেই হামলা মামলার শিকার হচ্ছে। এটা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী নীল নকশার পরিকল্পনার অংশ।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীদের ওপর ঠাকুরগাঁওসহ সারাদেশে রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রশ্রয়ে ও পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা-আক্রমণ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ফখরুল বলেন, আমি ঠাকুরগাঁওয়ে কিছুদিন আগে যখন এলাম তখনো পরিবেশ স্বাভাবিক ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে এখানে আসার পরে যা দেখলাম- প্রকাশ্যে বড় বড় অস্ত্র-রামদা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে তারা। যখনই বিভিন্ন পাড়া-এলাকায় ঢুকছি, শুনছি আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ধমক দিচ্ছে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেবে না। আরও দুঃখজনকভাবে যে অভিযোগ উঠেছে- তাদের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন থাকছে। প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে প্রশাসন মিটিং করে বলেছে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে যেন কেউ না দাঁড়ায়। এই অবস্থা হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করা বোকামী ছাড়া আর কিছুই নয়।

দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কখনোই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্ভব নয় বলে নিজের অভিমত পুনর্ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এটা প্রমাণিত হচ্ছে এখন পর্যন্ত তারা যে অবস্থায় চলছে, বিরোধী দল কোনো কাজই করতে পারছে না, তাদের মাঠে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। কতোগুলা জায়গা আছে, যেখানে প্রশাসন হয়তো কিছুটা লিবারেল থাকাতে বিরোধী প্রার্থীরা কিছুটা নামতে পারছেন, অন্য জায়গায় নামতেও পারছেন না।

বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত তৈরির অপচেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগ নিজেরাই সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালিয়ে বিএনপি’র উপর দোষ চাপাচ্ছে মামলা দিচ্ছে। এসব নির্বাচনী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীসহ জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, এখানে পুরো পরিবারসহ আমরা অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সঙ্গে বাস করে আসছি। ঠাকুরগাঁওয়ে সামাজিক ব্যবস্থাও অত্যন্ত চমৎকার। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে বিএনপির জেলা শাখা সভাপতি তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি মো. আলম, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিনসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মির্জা ফখরুল ঢাকার উদ্দেশে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরের পথে রওনা হন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here