শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশেনের নতুন কমিটির অভিষেক

0
588

বাংলা খবর ডেস্ক:
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের নব নির্বাচিত কমিটির অভিষেক ও পারিবারিক পূনর্মিলণী জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ১৯ জানুয়ারি শনিবার রাতে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের বেলাজিনো পার্টি নতুন কমিটিকে উৎসব মূখর পরিবেশে বরণ করে নেয়া হয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কৃষিবিদ পরিবারের শতাধিক সদস্য অংশ নেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। শুরুতেই প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এরপর পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন কৃষিবিদ মিজানুর রহমান। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক রেজাউল করিমের প্রানবন্ত সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আসাদুল বাকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, কৃষিবিদ মীর ফরিদ, কৃষিবিদ এম এ রশীদ, ড. গোলাম সাদমানী, কৃষিবিদ শাহাবুদ্দীন টিটু, কৃষিবিদ সুলতান শাহরিয়ার, কৃষিবিদ বেদারুল ইসলাম বাবলা, সাপ্তাহিক ঠিকানার সম্পাদক ফজলুর রহমান, কৃষিবিদ মনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আসা কৃষিবিদদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। এরপর সংগঠনের সভাপতি আসাদুল বাকি নব নির্বাচিত কার্যকরি কমিটির নেতৃবৃন্দকে পরিচয় করিয়ে দেন।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। এজন্য কৃষকদের একটা বড় অবদান রয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিলো সাড়ে ৭ কোটি। তখন খাদ্য আমদানি করতে হতো ৩০ লাখ টন। এখন আর গম ছাড়া আমাদের কোন খাদ্য আমদানি করতে হয়না। এই অবদান কৃষক, বাংলাদেশের সরকার ছাড়াও কৃষিবিদদেরও। তবে এই সুসংবাদের পাশাপশি কিছু দুঃসংবাদও রয়েছে। তা হল প্রতিবছর আমাদের কৃষিজমি ১ ভাগ করে কমে যাচ্ছে। কৃত্রিম সার ব্যবহার করায় জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে। জলবায়ূর প্রভাবে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। এতে ভবিষ্যতে আমাদের কৃষিখ্যাত আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। আমরা পৃথিবীতে চতুর্থ চাল রপ্তানিকারক দেশ। ভেজিটেবলও রপ্তানিতেও আমরা তিন নম্বরে চলে গেছি। এই সাফল্যের কথা আমরা যখন জাতিসংঘে আমরা বলি। বিশ্ব সম্প্রদায় তখন সবাই অবাক হয়। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে আমাদের প্রশ্ন করে, আমরা ঠিক বললাম কিনা। জাতিসংঘে খাদ্য বিষয়ক তিনটি সংগঠন আছে। জাতিসংঘে বিভিন্ন পলিসি তৈরী করার আমাদের সক্রিয় ভূমিকা থাকে। বাংলাদেশে ফুড সেফটি একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমি অবসরে যাবার পর অর্গানিক ফুড নিয়ে কাজ করবো।

অভিযোগের সুরে তিনে বলেন কৃষিবিজ্ঞানীরা বাংলাদেশের সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে পড়াশোনা করে জাপানে স্কলারশিপ নিয়ে যায়। সেখানে উচ্চতর শিক্ষা নিয়ে আর কেউ দিশে ফিরে আসেনা। দেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিয়োজিত না করে তারা চলে যাচ্ছেন অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত দেশে। তাদের মেধা কিন্তু বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছেনা। তিনি বিদেশে বসেই বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষিপণ্য নিয়ে গবেষনা করে সরকারকে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ নেতারা বলেন, বাংলাদেশর কৃষিবিদরা পৃথিবীর সবখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। শেরে বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সুনাম দেশে নয়, বিদেশেও রয়েছে। আমরা এই সংগঠনের মাধ্যামে মানবতার কল্যানেও কাজ করছি। তারা বলেন, কৃষিবিদদের মধ্যে প্রথমদিকে যারা আমেরিকা এসেছেন তারা আসলে ভালো চাকরি পাননি। ভালো সুযোগ কিভাবে পাওয়া যায় সে পথ দেখানোর কোন লোক ছিলোনা। কিন্তু এক পর্যায়ে আমরা সিটি, ফেডারেলসহ সরকারি বেসরকারি নামি দামি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছি। আমাদের শতকরা ৯৮ ভাগ কৃষিবিদ ভালো কাজ পেয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে এই এলামনাই এসোসিয়েশনের মাধ্যমে। কারন এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা সবাইকে সব ধরনের সহায়তা করেছি। এবং এখনো করে যাচ্ছি। তারা বলেন, সংগঠনটি এখন চার ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। আমরা এই বিভক্তি চাইনা। আমরা ঐক্য চাই। এক থাকতে চাই। এক থাকলে আমরা সবখানে সম্মানিত হবো। নিজেদের এবং অন্যের জন্য কল্যানকর কাজ করতে পারবো। সবাই সহযোগিতা করলে সংগঠনটা ভালো চলবে। বাংলাদেশে আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ন। এই অবদান কৃষিবিদদের। আগামী দিনে এই সমৃদ্ধির অভিযাত্রা অব্যাহত থাকুক এটাই আমরা প্রতাশা করি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাফিজুর রহমান, অধ্যাপিকা হোসনে আরা বেগম মীর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, রশীদ, আসাদুজ্জামান কিরন প্রমূখ।
পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রাফেল ড্র’র ও নৈশ ভোজের আয়োজেন করা হয়। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here