২০২০ সালের মধ্যে কানাডায় ১০ লাখ মানুষ পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস ও চাকরির সুযোগ পাবেন

0
107

বাংলা খবর ডেস্ক:
কানাডায় ২০২০ সালের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস ও চাকরির সুযোগ পাবেন!
ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম ডেস্ক : আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা উত্তর আমেরিকায় অবস্থিত। কানাডা একটি দ্বিভাষিক (bilingual) দেশ। ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ দেশটির দাপ্তরিক ভাষা।

সম্প্রতি কানাডার ইমিগ্রেশন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আহমেদ হুসেন বলেছেন, বর্তমানে প্রচলিত প্রোগ্রামের আওতায় ২০২০ সালের মধ্যে কানাডায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ পরিবারসহ স্থায়ীভাবে বসবাস ও চাকরির সুযোগ পাবেন।এই সংবাদ পাওয়ার পর অনেকেই ভাবছেন, এটিই বোধ হয় স্বপ্ন পূরণের সুবর্ণ সুযোগ। সম্ভব হলে বিষয়টি সত্যিই তাই। তবে এই প্রক্রিয়াটি এতটা সহজও নয়। সঠিক যোগ্যতাসম্পন্ন লোকজনই মূলত এই সুযোগ পাবেন। সঠিক প্রোগ্রাম নির্বাচনের দক্ষতার ওপর পুরো বিষয়টি নির্ভর করে। অন্যথায় পুরো বিষয়টিই হবে মিথ্যা-মরীচিকা। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর অন্যতম এই দেশটিতে রয়েছে কাজ করার প্রচুর সুযোগ ও বসবাস করার চমৎকার পরিবেশ।

উন্মুক্ত চাকরির বাজার

সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ, অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রজেক্ট ম্যানেজার, বিজনেস অ্যানালিস্ট, কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ, আইটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, সিনিয়র অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ও ম্যানুফ্যাকচারিং পেশাগুলোর সর্বাধিক চাহিদা থাকলেও প্রায় ৩৫০টি পেশার পেশাজীবীদের চাহিদা রয়েছে দেশটিতে। এনজিও, ব্যাংকার, ডাক্তার, ম্যানেজার, করপোরেট এক্সিকিউটিভ, ফিজিওথেরাপিস্টসহ অন্যান্য পেশার লোকজনও সুযোগটি গ্রহণ করতে পারবেন।

দেশটিতে বেকারত্বের হার মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশ, যা পৃথিবীর অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম। সাধারণত গড়ে ঘণ্টায় ২৬ দশমিক ৮৩ কানাডিয়ান ডলার উপার্জন করা যায় এই দেশটিতে। কাজের নিরাপত্তা, পরিবেশ বিবেচনা করলে কানাডায় রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে স্থিতিশীল চাকরির বাজার। বেশি আয় করার সুযোগ আর জীবনধারণের খরচ কম হওয়ায় দেশটি সবার পছন্দের শীর্ষে।

যাঁরা নতুন ব্যবসা করতে চাইবেন, তাঁদের জন্য বিনা জামানতে রয়েছে অন্তত দুই লাখ ৫০ হাজার কানাডিয়ান ডলার ঋণের ব্যবস্থা। নতুন অভিবাসী হিসেবে চাকরি পেতে অসুবিধা হলে বা অসুস্থতার কারণে কাজ করতে না পারলে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত নানা রকম আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। প্রতি মাসে ৫৮ হাজার ৬০০টি নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হয় দেশটিতে।

দুনিয়ার স্বর্গে বসবাস

৩৮.১৭ শতাংশ ফরেস্ট এলাকা সমৃদ্ধ পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি দেশ কানাডা। বাতাসের বিশুদ্ধতার দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটি। কানাডায় স্থায়ী নাগরিকত্বের জন্য ছয় বছরের মধ্যে মাত্র এক হাজার ৪৬০ দিন থাকার অভিজ্ঞতা থাকলেই আবেদন করা যায়। কানাডার নাগরিক হিসেবে একই সঙ্গে আপনি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের নাগরিকত্বও গ্রহণ করতে পারবেন।

২০১৯ সালের শেষ দিকে কানাডার জনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩৭ দশমিক ২৮ মিলিয়ন। এর মধ্যে টরন্টোতে সর্বাধিক সংখ্যক লোকজন বসবাস করেন। এরপর রয়েছে মন্ট্রিল ও ক্যালগ্যারির অবস্থান। নিরাপত্তার দিক থেকে কানাডায় ক্রাইম রেট নেই বললেই চলে। বেটার লাইফ ইনডেক্সে কানাডার বর্তমান পয়েন্ট ১০-এর মধ্যে ৯.৭।

আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাব্যবস্থা

স্থায়ী নাগরিকদের সন্তানরা পাবলিক স্কুলে ১৮ বছর পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে থাকে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, স্থায়ী নাগরিকদের জন্য টিউশন ফি তুলনামূলক অনেক কম। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েশন করতে টিউশন ফি দিতে হয় চার হাজার ৩৩৩ কানাডিয়ান ডলার অথচ বাইরের একজন ছাত্রকে দিতে হবে ১৯ হাজার ৬৪৩ কানাডিয়ান ডলার।

দেশটিতে আনুমানিক ৯৬টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কানাডার টপ লিস্টেড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭টি। শিক্ষার মান, খরচ, পড়াশোনা চলাকালীন কাজের সুযোগ, নিরাপত্তা, স্থায়ী হওয়ার সুযোগ ইত্যাদি কারণে সারা বিশ্বের ছাত্রছাত্রীদের কাছে কানাডা সব সময়ই সবার পছন্দের শীর্ষে। প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রী এই দেশে আসেন পড়াশোনা করতে।

চিকিৎসা সুবিধা

কানাডায় প্রবেশ করার তিন মাস পর থেকেই আপনি চিকিৎসা সুবিধার আওতায় চলে আসবেন। সাধারণত সরকার চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে আর্থিক সুবিধা দেয়, তা দিয়ে প্রায় ৯৮ শতাংশ চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা যায়। নাগরিকরা সবাই সরকারি হেলথ ইন্স্যুরেন্সের আওতায় থাকেন। বয়োবৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরাও বিশেষ প্রণোদনা পেয়ে থাকেন। কানাডার নাগরিকদের গড় আয়ু ৮১ বছর।

ট্যাক্স

ফেডারেল, প্রভিনশনাল, মিউনিসিপাল কর্তৃপক্ষ সাধারণত ট্যাক্স নিয়ে থাকে। আয়করের ক্ষেত্রে শুধু কানাডায় উপার্জিত অর্থের ওপর আয়কর দিতে হয়। নতুন অভিবাসীদের জন্য তাদের সম্পদের কোনো হিসাব দিতে হয় না। সাধারণত ৪৬ হাজার ৬০৫ কানাডিয়ান ডলার আয়করধারীদের ১৫ শতাংশ হারে ট্যাক্স দিতে হয়।

এ ছাড়া বর্ণবৈষম্য, ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে পার্থক্য নেই। উল্লেখযোগ্য আরেকটি বিষয় হলো, কানাডাকে বলা হয় একশভাগ দুর্নীতিমুক্ত একটি দেশ। ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অধিকারের বিষয়ে কানাডার বিকল্প কোনো দেশ নেই।

আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সুবিধা

কানাডার একজন স্থায়ী নাগরিক পৃথিবীর ১৭০টি দেশে অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণ করার সুযোগ পেয়ে থাকে।

পারিবারিক মিলনমেলা

কানাডা সরকার পরিবারকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। পিতা-মাতার জন্য ১০ বছর মেয়াদি সুপার ভিসা দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটি সহজ ও দ্রুত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here