মৃত্যুর দুয়ার থেকে বেঁচে ফিরেছেন ছোট ও বড় পর্দার অভিনেত্রী অহনা রহমান লাকি। সুমন নামে নেশাগ্রস্ত এক ট্রাকচালক তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল বলে সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন। সেই ঘটনায় গুরুতর আহত অভিনেত্রী প্রথমে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে এবং পরে অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাসায় রয়েছেন। তবে চলাফেলা করছেন হুইল চেয়ারে।
দুঃস্বপ্নময় সে রাতের বর্ণনা দিয়ে অহনা জানান, পুরান ঢাকায় তার এক বন্ধুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল। সেটা শেষ করে আসতে রাত তিনটা বেজে যায়। নিজে গাড়ি চালিয়ে সে সময় উত্তরার বাসায় যাচ্ছিলেন নায়িকা। সঙ্গে ছিলেন তার খালাতো বোন লিজা ইয়াসমিন মিতু। উত্তরার সাত নম্বর সেক্টরের লেক ড্রাইভ রোডে পৌছালে পেছন থেকে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক অহনার গাড়িকে ধাক্কা দেয়।
এরপর গাড়ি দাড় করিয়ে অভিনেত্রী এর প্রতিবাদ করলে ট্রাকচালকের সঙ্গে শুরু হয় তার তর্কাতর্কি। অহনার দাবি, ট্রাকের জানালা উচুঁ হওয়ায় চালকের কথা তিনি ঠিকমতো শুনতে পাচ্ছিলেন না। যার কারণে তিনি ট্রাকের দরজায় ওঠেন। এ সময় ট্রাকের হেলপার চালককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ওস্তাদ, উনি নায়িকা। বাঁচলে কিন্তু আমরা ফেঁসে যাব।’ অহনা জানান, আনুমানিক ১৫ বছরের এক ছেলের মুখে এমন কথা শুনে তিনি চমকে ওঠেন।
ঠিক সেই মুহূর্তে ট্রাক চালিয়ে দেন চালক। জানালায় ঝুলতে থাকেন অহনা। এভাবে তাকে ১২ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত নিয়ে যায় ট্রাকচালক। পরে অহনার বাঁচাও বাঁচাও চিৎকারে স্থানীদের বাধার মুখে পড়েন ট্রাকচালক। ওই সময় সে সজোরে ব্রেক কষে। ছিটকে রাস্তার পাশে পড়েন অহনা। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় ক্রিসেন্ট হাসপাতালে। সেখান থেকে পরে ভর্তি হন রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে।
ঘটনার পর চম্পট দেয় ট্রাকচালক ও হেলপার। ওই রাতের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন অহনার খালাতো বোন লিজা। শুরু থেকেই ঘটনাটি তিনি মোবাইলে ভিডিও করছিলেন। বোনের সঙ্গে ট্রাকচালকের এমন নির্মমতায় উত্তরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন লিজা। এরপর আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ট্রাকের হেলপার রোহানকে। তার দেওয়া তথ্য ধরে পরে সাভার থেকে গ্রেপ্তার হন ট্রাকচালক সুমনও।
তবে সেই রাতে ট্রাকের জানালা বেয়ে উঠার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ার ভক্তদের সমালোচনার স্বীকার হন অভিনেত্রী অহনা। তাদের মতে, এতটা দুঃসাহস দেখানো উচিত হয়নি। এই সমালোচনার পর অহনা কয়েকদিন আগে দাবি করেন, জানালা বেয়ে না উঠলে চালক নাকি তার ওপর দিয়েই ট্রাকটি চালিয়ে দিতেন। জীবন বাঁচাতেই তিনি লাফিয়ে জানালায় উঠেছিলেন বলে জানান।