কথায় বলে প্রেম মানে না বয়স, জাত, কুল। তারই প্রমাণ রেখেছেন জোসেফ কনার (৫৩) ও ইসাবেলা সেইঞ্জ (২০)। তাদের বয়সের ব্যবধান ৩৩ বছর। তাতে কি! ওই যে মনের মিল। সেই থেকে তাদের প্রেম। সেই প্রেম শুধু প্রেমই নয়। একেবারে জোসেফ কনারের দুই সন্তানের মা হয়ে গেছেন ইসাবেলা সেইঞ্জ। তবে এখনও তারা বিয়ে করেন নি।

এ বছরের শেষের দিকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করছেন।
তারা দু’জনেই চাকরি করতেন একই স্কুলে। সেখানেই তাদের প্রেমের সূত্রপাত। জোসেফ কনার অবসরপ্রাপ্ত একজন অফিসার। তিনি ওই স্কুলে টিম গেম হিসেবে পরিচিত ল্যাক্রোসে বিষয়ক কোচ ছিলেন। স্কুলে তাদের জানাশোনা হওয়ার পর এক মাস ধরে ডেটিং চলতে থাকে। ডেটিং মানে শুধু ঘোরাঘুরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে অবাধ শারীরিক সম্পর্ক। বাধাহীন সেই সম্পর্কে এক মাসের মধ্যেই ইসরাবেলা নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা হিসেবে আবিষ্কার করে। সেই সম্পর্কের জের ধরে ইসাবেলার এখন দুটি মেয়ে। প্রথমটির নাম অটাম । বয়স ১৫ মাস। দ্বিতীয়টির নাম উইন্টার। বয়স দেড় মাস।
অন্যদিকে জোসেফ এখন মোট ৬ সন্তানের পিতা। আগের সম্পর্ক থেকে তার রয়েছে চারটি সন্তান। তারা হলেন জোসেফ (৩৪), জ্যাসন (২৪), জাস্টিন (২১) ও জ্যাকুলিন (২৩)। জোসেফ কনার ও ইসাবেলা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামির বাসিন্দা। তাদের সম্পর্ক নিজেদের মধ্যে খুবই রোমান্টিক। বয়সের পার্থক্য বুঝতে পারেন না ইসাবেলা। সব কিছু ঠিকঠাক চালিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু বিদঘুটে অবস্থার সৃষ্টি হয় তখনই, যখন তারা দু’জনে বাইরে যান। ওই সময়টাতে লোকজন জোসেফ কনারকে ভেবে বসে ইসাবেলার পিতা হিসেবে। বিষয়টি খুবই বিব্রতকর হয়ে দাঁড়ায় তখন। ইসাবেলা বলেন, যখনই আমরা একসঙ্গে বাইরে যাই সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। হঠাৎ কেউ একজন জিজ্ঞেস করে বসলেন- উনি কি আপনার পিতা? এমন ব্যক্তিদের আমি কখনো কখনো কারেকশন করিয়ে দিই। তা শুনে তারা চুপ মেরে যায়। আবার কেউ কেউ আমাদেরকে নিয়ে মজা করে। কিন্তু আমি যা মনে করি তাহলো প্রত্যেকেরই একটা নিজস্ব মতামত আছে। কিন্তু জীবনটা খুবই সংক্ষিপ্ত। এই সময়টাতে এমন কিছু করা উচিত যা আপনাকে বা আমাকে সুখী করবে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে ল্যাক্রোস ক্লাবে প্রথম জোসেফ কনারের সঙ্গে পরিচয় ইসাবেলার। তখন তার বয়স সবে ১৮। ইসাবেলা বলেন, আমি মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হতে চাইছিলাম। তার আগে আমাকে মেডিকেল ট্রেনিং নিতে হয়েছিল। জোসেফ কনার ছিল একজন কোচ। ফলে তার কাছে গেলাম। কথাবার্তা শুরু হলো। এক পর্যায়ে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়লাম। প্রথমে তাকে আমি মোটেও পছন্দ করতাম না। কারণ সে ছিল একটু রাগি। কিন্তু তাকে যখন আমি জানতে পারলাম। রাজনীতি, পরিবার, তার ছেলেমেয়ে নিয়ে কথা বললাম দেখি সে একজন চমৎকার পুরুষ। সে আসলে রাগি নয়। সে শুধু তার টিমের সামনে কড়া থাকে।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তারা চুটিয়ে ডেটিং দেয়া শুরু করেন। এর এক মাসের মাথায় ইসাবেলা বুঝতে পারেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। ইসাবেলা বলেন, যে মাসে আমি তার সঙ্গে দেখাসাক্ষাত শুরু করি, সেই মাসেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। এতে সব কিছু দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যেতে থাকে। আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু জোসেফ কনার আমার প্রতি ছিল ভীষণ সাপোর্টিভ। আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, আমরা অবশ্যই একসঙ্গে থঅকবো। বসবাস করার জন্য মিয়ামিতে একটি বাসা কিনবো।
২০১৭ সালের আগস্টে জন্ম হয় অটামের। এর ঠিক ৫ মাস পরেই ইসাবেলা আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। ইসাবেলা বলেন, অন্য মেয়েদের মতো সব সময়ই আমি মা হতে চেয়েছি। বাচ্চাদের খুব ভালবাসি আমি। তাই আমি দ্বিতীয় সন্তান নিতে প্রস্তুত ছিলাম। সেই থেকে দ্বিতীয় সন্তানের মা হয়েছি।
এ বছরের শেষের দিকে এই যুগল বিয়ে করার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু ইসাবেলার চেয়ে ৩৩ বছরের বড় একজন পুরুষের সঙ্গে তার এমন সম্পর্ককে তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নিতে পারছিলেন না তার পরিবারের সদস্যরা ও বন্ধুরা। ইসাবেলা বলেন, বয়সের এত ব্যবধান নিয়ে আমার পরিবার ছিল উদ্বিগ্ন। যখন তারা জানতে পারলো আমরা খুব সুখী তখন তারা তা মেনে নিয়েছে। আর এমন সম্পর্কের কারণে আমি প্রচুর বন্ধুকে হারিয়েছি। আমি যখন মা হয়েছিল তখন অনেক ছাত্রছাত্রী কলেজে গিয়েছে পড়াশোনা করতে। কিন্তু আমার জীবন ধাবিত হয়েছে ভিন্ন পথে। অন্যদিকে জোসেফ কনার বলেন, আমাদের বয়স কোনো বড় ফ্যাক্টর নয়। আমি বয়সের দিকে তাকাই নি। আমি দেখেছি ইসাবেলার ব্যক্তিত্ব। সে সব কিছু যেভাবে মোকাবিলা করে এবং তার যে পরিপক্বতা তাতে আমি মুগ্ধ। তার ভিতর সব সময় আনন্দ লুকিয়ে থাকে। তাক যখন আমার বন্ধুরা দেখে তারা তো থ’ বনে যায়। কারণ, ইসাবেলা খুবই সুন্দরী। কিভাবে আমার সঙ্গে সে সুখী আছে তা নিয়ে তারা চিন্তিত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here