প্রথমবারের মতো একজন নারীকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ করেছে সৌদি আরব। তিনি হলেন প্রিন্সেস রিমা বিনতে বন্দর আল সাউদ। তাকে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করা হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। শনিবার রাজকীয় এক ডিক্রিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এ খবর দিযেছে অনলাইন বিবিসি।

এর ফলে প্রিন্সেস রিমা ওই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন সৌদি আরবের বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ছোটভাই প্রিন্স খালিদ বিন সালমানের কাছ থেকে। প্রিন্স খালিদকে নিয়োগ করা হয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপমন্ত্রী। উল্লেখ্য, প্রিন্সেস রিমা তার পিতা বন্দর বিন সুলমান আল সাউদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্রে দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

তার পিতা বন্দর এ পদে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৯৮৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত।

পিতার এই দায়িত্ব পালনের কারণে প্রিন্সেস রিমাকে তার শৈশবের বেশির ভাগ সময় কাটাতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি অর্জন করেছেন জাদুঘর বিষয়ক পড়াশোনায় ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রি। ২০০৫ সালে রিয়াদে ফিরে আসার পর তিনি সরকারি ও বেসরকারি খাতে কাজ করেছেন। বেশ কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। একটি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে। প্রিন্সেস রিমাকে দেখা হয় নারী অধিকারের একজন অগ্রণী হিসেবে। সম্প্রতি তিনি সৌদি আরবের জেনারেল স্পোর্টস অথরিটিতে কাজ করেছেন। এ সময়ে খেলাধুলা ও শরীরচর্চায় অধিক হারে নারীর অংশগ্রহণের দিকে ছিল তার দৃষ্টি। বিশেষ করে তিনি মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সার বিষয়ে পরামর্শমুলক কাজ করেছেন। এ জন্য তিনি বেশ পরিচিতি পেয়েছেন।

বিবিসি লিখেছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন একটি কঠিন সময়ে, যখন সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনায় দেশটি আন্তর্জাতিক ক্ষোভের মুখে রয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনসুলেটে কি ঘটেছিল সে বিষয়ে পরস্পরবিরোধী ব্যাখ্যা দেয়ার পর সৌদি আরব অবশেষে স্বীকার করে নিয়েছে যে, জাামাল খাসোগিকে তাদের কনসুলেটে প্রবেশের পর হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার আগে সাংবাদিক খাসোগি ওয়াশিংটন পোস্টের একজন কলামনিস্ট ছিলেন। তিনি সৌদি আরব সরকারের ঘোর সমালোচক ছিলেন।

তাকে হত্যায় জড়িত থাকায় ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম বার বার চলে আসে। কিন্তু সৌদি আরব তা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে। তবে তাদের এমন দাবির বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সম্প্রদায়। দেশটির আইন প্রণেতারা হোয়াইট হাউসের ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেছেন যাতে এই হত্যার আরো তদন্ত হয়। সম্প্রতি কংগ্রেস সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যকার অন্যান্য ক্ষেত্রের সম্পর্ক তদন্ত করে দেখছে। এর মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক প্রযুক্তি ও ইয়েমেন যুদ্ধ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here