ডাকসুতে ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতির পুনরাবৃত্তি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সোমবার বিকালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করে এর নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, ২৮ বছর পর আজকে ছাত্রদের যে নির্বাচন ডাকসু অনুষ্ঠিত হলো। এই নির্বাচনে সারা দেশের ছাত্র সমাজ এবং রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিলো। অনেকে ধারণা করে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনে মধ্য দিয়ে নতুন একটি সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এখানেও জাতীয় নির্বাচনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকার দলের ভোট ডাকাতি, গুন্ডামী, সন্ত্রাসী তার প্রতিবাদ করেছে। এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃপক্ষের অংশগ্রহণ দেখতে পেয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে যে অনিয়ম হয়েছে আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যায়্য দাবির প্রতি আমরা সমর্থন জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল উপজেলা পরিষদের প্রথম পর্যায়ের একটা নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনেও সাধারণ মানুষ কেউ অংশ গ্রহন করেনি। আমরা মনে করছি যে, ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনে সরকার যে নজিরবিহীন ভোট ডাকাতি করেছে সেই নির্বাচনে ভোট ডাকাতির নিরব প্রতিবাদে জনগন উপজেলা নির্বাচন থেকে বিরত থেকেছে।

এর মাধ্যমে (ডাকসু ও উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্ব) এটা আবারো প্রমাণিত হলো যে, দেশে প্রকৃতপক্ষে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাই ভেঙে গেছে।

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে দ্রুত সুচিকিৎসার দাবিও জানানো হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে। একই সঙ্গে সারাদেশের মিথ্যা ও গায়েবী মামলায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও মামলা প্রত্যাহার ও তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিও স্টিয়ারিং কমিটিরি এই বৈঠক থেকে করা হয়েছে বলে জানান ফ্রন্টের মুখপাত্র।

ড. কামাল হোসেন প্রারম্ভিক বক্তব্যে দেশে সংগঠিত অনিয়ম ঐক্যের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, দেশের কার্য্কর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আইনের শাসনকে রক্ষা করতে পারি এসব ব্যাপারে আমাদের মধ্যে ঐ্ক্যমত হয়েছে। আমরা আশা করতে পারি যে, ঐক্যের পক্ষে সবাই ঐক্যমত। এখানে বিভিন্ন দল আছেন। তারাও বলেছেন ঐক্যকে সুসংহত করার কোনো বিকল্প নাই। কেননা দেশের ১৬ কোটি মানুষের যে আকাংখা বাস্তবায়ন করতে হলে এই ঐক্যের শক্তির মধ্য দিয়ে তা সম্ভব হবে।

স্টিয়ারিং কমিটির সভার সিদ্ধান্ত পড়ে শুনিয়ে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, আমাদের ফ্রন্ট ও গণফোরামের একজন প্রার্থী সুলতান মো. মনুসর সাহেব সংসদে শপথ নিয়েছেন ফ্রন্ট ও গণফোরামের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে। সেই সংসদে তিনি শপথ নিয়েছেন যে সংসদ আমরা স্বীকার করছি না। আমরা বলছি এই সংসদ জনগনের প্রতিনিধিত্ব করছে না। সেই জনপ্রতিনিধিত্বহীন একটা তথাকথিত সংসদে সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে তিনি জাতির সঙ্গে প্রতারনা করেছেন।গণফোরাম তাকে ইতিমধ্যে বহিস্কার করেছে।

আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সুলতান মো. মনসুরেরর শপথ গ্রহনের আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা মনে করছি যে, তাকে সংসদ সদস্যের যে পদ দেয়া হয়েছে সেটা অবৈধ, এটা বেআইনি এবং দল গণফোরাম থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে যোগ্য নন। এ বিষয়ে আমরা যথাযখ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

গ্যাসের মূল বৃদ্ধির সরকারের উদ্যোগের প্রতিবাদ জানিয়ে এই পথ থেকে সরকারকে সরে আসার আহবানও জানান মির্জা ফখরুল।

বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।

মতিঝিলের চেম্বারে ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে এই বৈঠকে বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আবদুল মঈন খান, জেএসডির আসম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, হাবিবুর রহমান তালুকদার, ইকবাল সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের শহিদুল্লাহ কায়সার, জাহেদ-উর রহমান. গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here