চরম নেতৃত্ব সংকটে নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটি

0
676

ডাঃ ওয়াজেদ এ খান
চরম নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে বাংলাদেশী কমিউনিটি। এ সংকট শুধু নিউইয়র্কে নয়। গোটা বাংলাদেশী আমেরিকান সমাজেই এর বিস্তার ঘটেছে। যোগ্য নেতৃত্ব হীনতার কারণে কমিউনিটির অভ্যন্তরীন সমস্যা নিরসনে ব্যর্থতার পাশাপাশি আমেরিকান রাজনীতির মূলধারায় বাংলাদেশীরা পারছে না নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করতে। অথচ বিশ্বের যেকোন অভিবাসী কমিউনিটির চেয়ে সংগঠন ও নেতৃত্ব প্রিয়তার দিক থেকে বাংলাদেশীরা শতগুণ এগিয়ে রয়েছে। নিউইয়র্কেই বাংলাদেশীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, আঞ্চলিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, পেশাজীবী, স্বেচ্ছাসেবীসহ সংগঠন আছে তিন শতাধিক। তারপরও প্রতিমাসেই নূতন দু’একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করছে কমিউনিটিতে। আবার প্রতিষ্ঠিত সংগঠনগুলো মামুলি অভিযোগে ভেঙ্গে হচ্ছে খন্ড-বিখন্ড। নেতৃত্ব নিয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে বিভেদ-বিদ্বেষ, হাঙ্গামা, মামলা-মোকাদ্দমা। নেতৃত্বের লড়াই-কোন্দল, ব্যক্তিগত ইগো, রাজনৈতিক বিরোধ, আঞ্চলিকতা ও আর্থিক লেন-দেন সহ নানা কারণে সংগঠনগুলো ভেঙ্গে হচ্ছে খান খান। বাংলাদেশীদের দ্বারা পরিচালিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেও লেগেছে বিভক্তির ঢেউ। অনেক মসজিদ, মন্দির, গির্জার পরিচালনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিয়ে চলছে মামলা-মোকদ্দমা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনে বিভক্তির মূল কারণ নেতৃত্ব।
বাংলাদেশে কোন সংগঠনে নেতৃত্ব লাভের ক্ষেত্রে এখনো যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার নূন্যতম বাছ-বিচার করা হয়। প্রবাসে পরিচিতি সঙ্কটের কারণে সংগঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই রাতারাতি নেতা বনে যেতে চান। ফলে সংগঠনের কর্মকান্ডে সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতিকে বড় করে দেখে বিভেদ বিভক্তির পথে হাঁটতে শুরু করেন তারা। গড়ে তোলেন পাল্টা সংগঠন। আর এসব সংগঠনে শত সহস্র নেতার পদচারণা ঘটলেও যোগ্য নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কমিউনিটি। বন্যার পানি চারিদিকে থৈ থৈ করলেও পান করার মতো বিশুদ্ধ পানির যেমন অভাব থেকেই যায়। বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতৃত্বের বিষয়টিও তদ্রুপ। যোগ্য নেতৃত্বের অভাব কমিউনিটিতে ক্রমেই প্রকটাকার ধারণ করছে। নূতন প্রজন্মের সাথে স্পষ্ট হচ্ছে ব্যবধান। কমিউনিটির শিক্ষিত, যোগ্য ব্যক্তিরাও এব্যাপারে থাকছেন নির্লিপ্ত। কমিউনিটিতে ঘটমান বিভিন্ন কর্মকান্ডের সিংহভাগই অমূলক ও অপ্রয়োজনীয়। এসব নিয়ে নূতন প্রজন্ম এবং সাধারণ প্রবাসীদের মাঝে নেই কোন আগ্রহ আবেদন। স্বদেশী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নূতন প্রজন্মের মাঝে উজ্জীবিত রাখার শ্লোগান বা দোহাই দিয়ে প্রায়শই আনন্দানুষ্ঠান হচ্ছে ঘটা করে। বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার ও ব্যক্তি উদ্যোগে আয়োজিত এসব অনুষ্ঠানে কমিউনিটির মুখচেনা কতিপয় ব্যক্তি ছাড়া সার্বজনীন কোন অংশগ্রহণ নেই। তাছাড়া এসব অনুষ্ঠানের সারবত্তার সাথে বাংলাদেশী সমাজ-সংস্কৃতির মিল খোঁজে পাওয়াও দুষ্কর। বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে এসব অনুষ্ঠান আয়োজন কমিউনিটির জন্য কতোটা কল্যাণধর্মী তা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী অভিবাসীর সংখ্যা ম্যালথাস থিওরির মতো জ্যামিতিকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হয় শুধুমাত্র নিউইয়র্ক সিটিতেই এখন বাস করছে প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশী। যাদের বড় একটি অংশ ভাসছে সমস্যার সাগরে। নূতন এই অভিবাসী কমিউনিটির অনেকেই ভুগছেন ইমিগ্রেশন, বাসস্থান, শিক্ষা, চাকুরি ও আর্থিক অস্বচ্ছলতায়।
সন্তানদেরকে নিয়েও অনেক অভিভাবক বিপাকে। নূতন সমাজ, পরিবেশ, প্রতিবেশে খাপ খাওয়াতে পারছেন না তারা। সঠিক তথ্য ও পরামর্শের অভাবে অনেকের সন্তান বখে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব সমস্যা সমাধানে কতিপয় সংগঠন ও ব্যক্তি বিশেষের উদ্যোগ পরিলক্ষিত হলেও কমিউনিটির পরিধির তুলনায় তা অত্যন্ত গৌণ। এসব ক্ষেত্রে কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন ও নেতৃত্বের যে ধরণের ভূমিকা গ্রহণের প্রয়োজন কার্যত তা না হওয়ায় কমিউনিটির ভিত্তি দিন দিন হচ্ছে দুর্বল।
কমিউনিটির মূল অর্থই হল “কমন ইউনিটি”। যেখানে নিহিত থাকে একটি গোষ্ঠীর অভিন্ন স্বার্থের ঐক্য। কিন্তু এই অভিন্ন স্বার্থ অক্ষুণœ রাখার জন্য যে ধরণের ঐক্য ও কল্যাণধর্মী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও যোগ্য ত্যাগী নেতৃত্বের প্রয়োজন কমিউনিটিতে তা এখনো গড়ে উঠেনি। ফলে বাংলাদেশের জাতীয় অনুষ্ঠানাদি ঐক্যবদ্ধভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। অনৈক্যের কারণে একই দিনক্ষণে একই সংগঠন একাধিক অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। এসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত জনপ্রতিনিধি ও সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানালে তারা প্রায়শই বিব্রত বোধ করেন। তাছাড়া নিজেদের কমিউনিটির বিভক্তি ও দুর্বলতার দিকটাও তাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠে। নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটিতে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং তাদের কল্যাণ সাধনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ সোসাইটি। দীর্ঘ ৪৩ বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও সংগঠনটি অদ্যাবধি পৌছতে পারেনি তার অভিস্ট লক্ষ্যে। যোগ্য নেতৃত্ব এবং সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করতে না পারায় বাংলাদেশ সোসাইটি আজ অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিশেষ করে সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মামলার জালে জড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ সোসাইটি। নিজের গাঁটের অর্থ ব্যয় করে ভোটার বানানোর অনৈতিক প্রক্রিয়া এবং তাদের ভোটে নেতৃত্ব লাভের বিষয়টি এখন আদালতে গড়িয়েছে। নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ আনয়ন করে একজন সদস্যের দায়েরকৃত মামলার রেশ ধরে নিউইয়র্ক স্টেট এটর্নী জেনারেল বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় সোসাইটির কর্মকর্তাগণ কমিউনিটির সেবায় আত্মনিয়োগ করবেন না কোর্ট কাচারী সামলাবেন। কথা ছিলো বাংলাদেশ সোসাইটি ওয়ানস্টপ সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলবে “বাংলাদেশ হাউজ”। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন তো দূরের কথা উল্টো সোসাইটির বর্তমান ভবনটিই নাকি ডুবে গেছে দেনার দায়ে। মাদার সংগঠন বলে গর্ব করা হলেও বাংলাদেশ সোসাইটি সেইরকম মর্যাদা বহন করছে এমনটি মনে করেন না কমিউনিটির সাধারণ মানুষ। নেতৃত্বের অশুভ লড়াই ও মামলা-মোকাদ্দমার পর সোসাইটি এখনও যে একক এবং অখন্ড অস্থিত্ব নিয়ে টিকে আছে এটাই অনেকের কাছে গর্বের বিষয়। আঞ্চলিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও পেশাজীবীদের সংগঠনের মধ্যে কোনটি ভালো কাজ যে করছে না তা নয়। মূলত নেতৃত্বের কোন্দলের কারণে এসব সংগঠনের কার্যক্রম ক্রমেই স্তিমিত হয়ে পড়ছে। কোথায় নেই বিভক্তি? উত্তর আমেরিকায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে ঐক্য, সম্প্রীতি ও সৌহাদ্য ধরে রাখার প্রত্যেয়ে ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ফেডারেশন অব বাংলাদেশী এসোসিয়েশনস ইন নর্থ আমেরিকা-ফোবানা এখন বিভক্তির কারণে ম্রিয়মান। প্রথম দিকে ফোবানার ব্যানারে বার কয়েক “বাংলাদেশ সম্মেলন” যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত হলেও নেতৃত্বের কোন্দলে সংগঠনটি এখন বহুধা বিভক্ত। ফোবানা ইদানীং জড়িয়ে পড়েছে আইনী জটিলতায়। ব্যর্থ হয়েছে তার অভিস্ট লক্ষ্যে পৌছতে। ফোবানা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশীদের মাঝে বিভেদ বিভক্তি ক্রমাগত আরো বাড়ছে। চলতি বছর নিউইয়র্কে দু’টি ভিন্ন স্থানে আয়োজন চলছে বিভক্ত ফোবানা সম্মলনের। ড্রামা সার্কেলের আয়োজনে একটি সম্মেলন হবে লং আইল্যান্ডের নাসাউ কলিসিয়ামে।
পক্ষান্তরে বাংলাদেশী আমেরিকান ফ্রেন্ডশীপ সোসাইটির উদ্যোগে ফোবানার আরেকটি সম্মেলন হবে লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে। লেবার ডে উইকএন্ডে অনুষ্ঠেয় এ দু’সম্মেলনকে ঘিরে চলছে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষক যোগারের প্রতিযোগিতা। একই শহরে একই দিন ক্ষণে একই কমিউনিটিতে একই নামে অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়টিতে সাধারণ অভিবাসী বাংলাদেশীরা বিব্রত ও বিভ্রান্ত। তারা সহজভাবে নিতে পারছেন না বিষয়টি। তারপরও থেমে নেই উদ্যোগ-আয়োজন। সবচেয়ে বড় কথা হল লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় সাপেক্ষ এসব অনুষ্ঠানের মৌলিক অর্জন কি? কমিউনিটিতে এর প্রভাবই বা কি? এসব প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে কমিউনিটিতে। অপরদিকে আমেরিকান মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশী কমিউনিটি যতোটা না এগুতে পারছে তার চেয়ে বেশী পিছিয়ে পড়ছে। কে ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান এটা কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। বিবেচ্য বিষয় যারা ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান তারা কতোটা ঐক্যবদ্ধ থেকে নিজেদের কমিউনিটিকে মূলধারায় উপস্থাপন করতে পারছে। নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব কতোটা শক্তিশালী তা প্রমাণ করার জন্য সঠিক ও সময়োপযোগী কোন উদ্যোগ নেই। সিটি কাউন্সিল, স্টেট এ্যাসেম্বলী বা স্টেট সিনেট সহ স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনে বাংলাদেশী কমিউনিটির কেউ কেউ প্রার্থীও হচ্ছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় হোম ওয়ার্ক বা নিজের যোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনায় না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করার বিষয়টি খেলো হয়ে যাচ্ছে। অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে গিয়ে ঔষধি বৃক্ষের মতো একবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই ঝরে পড়ছেন রাজনীতির ময়দান থেকে। অনেকে আবার মূলধারার নেতাদের সাথে দু’চারটি ছবি তুলেই ঢেকুড় তুলছেন আত্মতৃপ্তির। আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে কেউ একজন প্রার্থী হলে তার বিপরীতে চলে যাচ্ছেন আরেকজন। রাজনীতিতে প্রার্থী নির্বাচনের বিষয়টি অবশ্যই একান্ত নিজস্ব। তারপরও বাংলাদেশী কমিউনিটির বৃহত্তর স্বার্থে সবাই মিলে একজন যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে তাকে সামনের দিকে এগিয়ে দিলে জয়লাভের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। শুধুমাত্র নাম ফাটানোর জন্য নির্বাচনে প্রার্থী না হয়ে কমিউনিটি থেকে প্রয়োজনে নূতন প্রজন্মের যোগ্য প্রার্থী খুঁজে বের করতে হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞজনেরা।
ইত্যেমধ্যে বিভিন্ন স্টেট ও শহরে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নেতৃত্ব যে উঠে আসছে না তা নয়। বিভিন্ন স্টেটে বেশ কয়েকজন নির্বাচিত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জনপ্রতিনিধি কমিউনিটির জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। বাংলাদেশ অভিবাসী জনস্যংখার তুলনায় যা অপ্রতুল। কমিউনিটি সতর্ক ও সচেতন হলে অবশ্যই এর মধ্য থেকেই আরো প্রতিভান যোগ্য নেতৃত্ব বেড়িয়ে আসবে। পূরণ করবে বিদ্যমান শূণ্যতা এদেশে অন্যান্য কমিউনিটিতেও এ ধরণের সংকট ছিলো। এখন বাংলাদেশী কমিউনিটিতে নেতৃত্বের যে সংকট বিরাজ করছে এ সংকট কাটিয়ে উঠতে কাউকে না কাউকে কোথাও না কোথাও কিছুটা ছাড় দিতে হবে। কমিউনিটির সব পর্যায়ে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিতে হবে একটি সুন্দর ও সম্ভাবনাময় কমিউনিটি এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থেই। সমাজকর্মীদেরকেই সামাজিক নেতৃত্ব গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বিরাজমান নেতৃত্ব পূরণে স্থানীয় কুটনীতিকদেরকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। এটা কোন শুভ লক্ষণ হতে পারে না।
ডাঃ ওয়াজেদ এ খান
সম্পাদক, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ নিউইয়র্ক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here