লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ায় দুই বাংলার জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস আহমেদের ভিসা বাতিল করেছে ভারতীয় দূতাবাস। একই সঙ্গে তাকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পশ্চিমবঙ্গ শাখা ফেরদৌস আহমেদকে ভিসা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে দেশটির নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। রাতেই শাহজাহাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার কথা রয়েছে তার।
হিন্দুস্তান টাইমস ও এনডিটিভির খবরে এ কথা বলা হয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ফেরদৌস আহমেদের ভিসা–সংক্রান্ত আচরণ লঙ্ঘনের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ভিসা বাতিল করেছে। এছাড়া তাকে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন ফেরদৌস। তার এ অংশগ্রহণের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে বিজেপি। এরপর দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে প্রতিবেদন চায়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত রোববার ফেরদৌস রায়গঞ্জ আসনের করণ দিঘি থেকে ইসলামপুর পর্যন্ত তৃণমূলের প্রচার মিছিলে অংশ নেন। এলাকাটি বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে। নির্বাচনী ওই প্রচারে ফেরদৌসের সঙ্গে ছিলেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার দুই তারকা অঙ্কুশ হাজরা ও পায়েল।
রায়গঞ্জ আসনে প্রচুর সংখ্যালঘু মুসলিমের বাস। জনসংখ্যার হারে মুসলিম বেশি। ওই আসনে বিজেপির প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী, কংগ্রেসের প্রার্থী দীপা দাসমুন্সি আর সিপিএমের প্রার্থী বর্তমান বিদায়ী সাংসদ মোহাম্মদ সেলিম।
ফেরদৌসের অংশগ্রহণের পর তীব্র প্রতিবাদ করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তৃণমূল তো বিদেশি তারকা এনে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। এ ধরনের ঘটনা এর আগে দেখিনি। কাল হয়তো ইমরান খানকে প্রচারে ডাকবে তৃণমূল। এভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি তারকা আসতে পারেন? তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন মানেন না। ভোট কম পড়লে রোহিঙ্গাদের ডেকে আনবেন। কাল হয়তো ইমরান খানকে তৃণমূলের প্রচারে ডাকবেন। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই।
তবে এর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতা মদন মিত্র। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অকৃত্রিম বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তাই এটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে হয়েছে। এর জন্য নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো প্রশ্ন নেই।