বাংলাদেশকে শক্তিশালী বাজার হিসেবে দেখছে বিনিয়োগকারীরা

0
87

 

সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের ফলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি আরও জোরদার হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের ব্যাপক চাহিদার বিষয়টি বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বিবেচনায় রেখেছে।

নিক্কেই এশিয়ান রিভিওয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার অধ্যুষিত দক্ষিণ এশিয়ার একটি অত্যন্ত কৌশলগত স্থানে অবস্থিত বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বয়স ২৫ বছরের কম। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে শক্তিশালী ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে দেখছে।

ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি) জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ ৬৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ৩ দশমিক ৬১ বিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। ২০১১ সালের চেয়ে এর পরিমাণ তিনগুণ বেশি।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিগারেট নির্মাতা আকিজ গ্রুপের কোম্পানি ঢাকা টোবাকোকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময় ক্রয় করেছে জাপান টোবাকো। ফলে দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। অন্যান্য প্রধান বিনিয়োগের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ স্টেক কিনেছে চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্চ। এটি বেইজিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি অংশ। এছাড়া চীনের আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিংয়ের কোম্পানি আলিপে মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী কোম্পানি বিকাশের ২০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বাংলাদেশ শাখার প্রতিনিধি র‌্যাগনার গুডমুন্ডসন নিক্কেই এশিয়ান রিভিউকে বলেন, এটা ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ বাড়াতে চলমান সংস্কারের গুরুত্বের পাশাপাশি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের গুরুত্বকে তুলে ধরেছে। জুনের শেষ নাগাদ চলতি অর্থবছরের এফডিআই গত বছরের তুলনায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে তার আশা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে মেট্রোরেল, সেতু, টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অন্যান্য প্রকল্প নির্মাণ করছে। এতে শত শত কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশী বিনিয়োগ রয়েছে। এর অধিকাংশই চীন ও জাপান থেকে এসেছে।

বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের অন্যতম প্রধান কৌশল দেশজুড়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি। এ কারণে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই জাপানের সুমিতোতো, সোজিৎজ, নিপ্পন স্টিল, শিনওয়া ও মারুহিসার মতো কোম্পানিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

বাংলাদেশে ইকোনোমিক জোনস অথোরিটি (বেজা) জানায়, সোজিৎজ একাই বন্দর নগরী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বেসরকারি বন্দর ও শিল্প পার্ক নির্মাণে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ১৭.৯ বিলিয়ান বিদেশি বিনিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সুযোগ সুবিধার দেশ। আপনারা এর মূল্যায়ন করতে পারেন।

ইউএনসিটিএডি জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের চেয়ে এফডিআইয়ে পিছিয়ে আছে। দেশটির এফডিআইর পরিমাণ ১৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়ার চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। মিয়ানমার, ইথিওপিয়া ও কম্বোডিয়ার এফডিআই’র যথাক্রমে ৩.৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ৩.৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ৩.১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here