প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সরকার ও প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির উচ্ছেদ চায় না। তবে দেশটির পরমাণু অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা যে কোনো মূল্যে থামিয়ে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ওয়াশিংটন।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে মন্ত্রিসভার বৈঠককালে এ কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমরা সেখানে (ইরানে) কোনো সরকার পরিবর্তন চাচ্ছি না। আদৌ না।
তবে তারা পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে পারবে না।’ সম্প্রতি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনও একই কথা বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অতীতে ইরানের সরকার পরিবর্তন করতে চাননি এবং এখনও চান না।
এদিকে তেলের ট্যাংকার আটক নিয়ে তেহরানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পারস্য উপসাগরে নিজেদের তৃতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেন।
মঙ্গলবার ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ‘এইচএমএস কেন্ট’ যুদ্ধজাহাজটি মোতায়েন করা হবে। খবর এএফপি ও বিবিসির।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সরকারের উদ্যোগে ২০১৫ সালে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। চুক্তির প্রধান লক্ষ্য ছিল, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না- তা নিশ্চিত হওয়া।
ওই সমঝোতায় ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আনার বিনিময়ে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
কিন্তু ওবামার ওপর ক্ষোভ থেকে সমঝোতা চুক্তি ‘বাজে’ আখ্যা দিয়ে গত বছরের মে মাসে ওই সমঝোতা থেকে আমেরিকাকে বের করে নেন ট্রাম্প।
সেই সঙ্গে ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন এবং নতুন চুক্তির জন্য চাপ দিতে থাকেন। এমনকি তেহরানে সরকার পরিবর্তনের হুমকিও দিয়ে আসছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্পের সরে যাওয়ার পর থেকে ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রেই উভয় পক্ষের মধ্যে ‘যুদ্ধের আশঙ্কা’ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই ইরান চুক্তির সব শর্ত মেনে এলেও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পক্ষগুলো কার্যত কোনো শর্তই মানছে না। ফলে গত সপ্তাহেই ইরানি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে, পাল্টা জবাব হিসেবে চুক্তির আংশিক লঙ্ঘন করে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ৩.৬৭-এর মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এই ঘোষণার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল যুদ্ধের হুমকিধমকি দিলেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটাকে গুরুতর বলে মনে করছে না। মঙ্গলবারই ইইউ’র পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান ফেদেরিকো মোঘেরিনি এক বিবৃতিতে সে কথা জানিয়েছেন।
পম্পেও’র অসংলগ্ন দাবি উড়িয়ে দিল ইরান : ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়- মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তেহরান।
জাতিসংঘে ইরানি রাষ্ট্রদূতের এক মুখপাত্র মঙ্গলবার বলেন, ‘ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে কোনোরূপ আলোচনার সুযোগ নেই।’ তবে এর আগে এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, যদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়, তবে ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। পম্পেও দাবি করেন, ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করতে চায়।