বাংলা খবর ডেস্ক: চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি বরগুনা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় মুক্তির পর কারা ফটকে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান মিন্নি। এ সময় কারা ফটকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর, ভাই আবদুল মুহিত কাফি, তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম এবং অ্যাডভোকেট মোস্তফা কাদের উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ১২টার দিকে হাইকোর্টের দেওয়া মিন্নির জামিনাদেশ বরগুনা আদালতে পৌঁছায়। হাইকোর্টের আদেশের সই করা কপি বরগুনার আদালতে এসে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই মিন্নির পক্ষে জামিননামা (বেলবন্ড) দাখিল করেন তার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম। এরপর সব দাফতরিক কাজ শেষ করে বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে জামিনাদেশ নিয়ে কারাগারে যান মিন্নির আইনজীবী আসলাম।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে এ মামলার ১৪ আসামিকে হাজির করা হয়। পরে আদালতের কার্যক্রম শেষে এ মামলায় গ্রেপ্তার ৬ কিশোরকে খুলনার শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে এবং অন্যদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ১৮ সেপ্টেম্বর।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে জামিনের আদেশের কপি বরগুনার আদালতে পৌঁছায়। মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী মিন্নিকে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে করা রাষ্ট্রপক্ষের আপিল আবেদনের ওপর নো-অর্ডার (কোনও আদেশ নয়) দেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। এর ফলে মিন্নির জামিনের মুক্তিতে আর কোনও বাধা নেই বলে জানান আইনজীবীরা। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ আদেশ দেন।
অন্যদিকে মিন্নিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আটকাতে ফের আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে। কিন্তু মিন্নির শ্বশুর মামলার ১৮ দিন পর গত ১৩ জুলাই এই হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত এমন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করার পর মামলাটির তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়। পরে এ মামলায় গ্রেফতার করা হয় মিন্নিকে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ২ জুলাই এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।