ক্লাবের নামে জুয়ার আসর নয়: মেয়র নাছির

0
65

বাংলা খবর ডেস্ক: ‘কেউ যদি বলেন, ক্লাব চালানোর জন্য জুয়ার আসর প্রয়োজন। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ক্লাব করি নির্মল বিনোদনের জন্য। এর জন্য শক্তিশালী মাধ্যম ক্রীড়াঙ্গন। এটি পবিত্র অঙ্গন। এটিকে অপবিত্র করার অধিকার কারও নেই। নিজের সামর্থ্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের থেকে নিয়ে ক্লাব পরিচালনা করবো।’

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আমান বাজার আইএস কনভেনশন হলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিবিরোধী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এসব কথা বলেন। এটি ছিল চসিকের ৪০তম মাদকবিরোধী সভা।

মেয়র বলেন, জুয়ার আসর বসিয়ে, মদের আসর বসিয়ে, ক্যাসিনো বসিয়ে ক্লাব পরিচালনার কথা কোথাও নেই। সংবিধান ও ইসলামে জুয়া নিষিদ্ধ। এটা জায়েজ করার সুযোগ নেই।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় ভ্রাতা শেখ কামাল যিনি অনেক বড় ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন, উনার নাম ব্যবহার করে জুয়ার আসর বসিয়ে ক্লাব চালাবে-এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। যারা জুয়ার বোর্ড বসাবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এটা করবেন।’ যোগ করেন মেয়র নাছির।

তিনি বলেন, ‘আমি পানও খাই না, সিগারেটও খাই না। আমার বগলের নিচে গন্ধ নেই। বুকে সাহস আছে। আমিও ক্লাব চালাই ১৯৮৫ থেকে। আমি চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, এখন দীর্ঘদিন যাবৎ সভাপতি। এ ক্লাব অনেকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমি ক্লাবঘর করছি না। কারণ ক্লাবঘর করলে কেউ না কেউ অবৈধ কাজ করবে। আমাদের ক্লাব এ ধরনের ফালতু কাজের সঙ্গে জড়িত নয়।’

ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া আকতার, যুগ্ম জেলা জজ জাহানারা ফেরদৌস, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক তপন কান্তি শর্মা, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এসএম সোহেল প্রমুখ।

মেয়র বলেন, অক্টোবরের ১৫-২৫ তারিখের মধ্যে বিশাল সমাবেশ করবো লালদীঘি মাঠে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধান অতিথি থাকবেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সিএমপি কমিশনার থেকে শুরু করে প্রশাসনের সবাই উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে ৪১ ওয়ার্ডে মাদক ব্যবসার মতো ঘৃণ্য পেশার সঙ্গে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে প্রকাশ করবো। সামাজিকভাবে তাদের বয়কট করবো। তারা এ চট্টগ্রাম শহরে থাকতে পারবে না। সে যেই হোক চট্টগ্রাম শহরে তাদের থাকার অধিকার নেই।

কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি নিয়ে সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী কমিটি করা হবে। আমরা এগুলো নির্মূল করতে চাই। কাঁচা টাকা, অবৈধ টাকার অধিকার যারা হোন তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন। অনেক ধরনের দুর্নীতি আছে। দুর্নীতি থেকে নিজেরা বিরত থাকতে হবে, পরিবারের সদস্যদের দূরে রাখবেন। পরিবারের সদস্য কোথায় যায় কার সঙ্গে মেশে খোঁজ রাখতে হবে। তারা যাতে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গিবাদে না জড়ায়- সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সে মন্ত্রী, এমপি যে-ই হোক। তারা নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত করছেন না, প্রজন্ম ও সমাজ ধ্বংস করছেন। তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের মাধ্যমে উন্নত, সমৃদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। তারা যদি মেধাশূন্য হয়, বিপথগামী হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। তাই দয়া, করুণা, সহানুভূতির সুযোগ নেই।

মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা

মেয়র বলেন, মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে জেহাদ বা যুদ্ধ ঘোষণা করছি। চট্টগ্রাম শহরের কোথাও কোনো মাদক বিক্রেতা থাকতে পারবে না। আপনাদের পরিচয় গোপন রাখবো, সিটি করপোরেশনের হট নাম্বারে নাম জমা দিতে পারবেন। আমার মোবাইলে এসএমএস দিতে পারেন। কাউকে হেয় করার জন্য কারও নাম দেবেন না। যাচাই-বাছাই করে আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবো।

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দ্রুত বড়লোক হওয়ার চিন্তা তোমাদের ধ্বংস ডেকে আনবে। ধীরে ধীরে বড় হতে হবে। মিরসরাই-সীতাকুণ্ড-ফেনীতে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হচ্ছে। লাখো মানুষের কর্মসংস্থান হবে। কেউ বেকার থাকবে না। ৭-১০ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম শহরের একজন মানুষও বেকার থাকবে না।

এর আগে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী আবাহনী ক্লাবসহ কয়েকটি ক্লাবে চলমান অভিযানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here