দাওয়াত পেলে অবশ্যই বাংলাদেশে যাব : পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী

0
58

বাংলা খবর ডেস্ক: ১৯৭১ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের জন্য যেসময় শিল্পী জর্জ হ্যারিসন গান গেয়ে তহবিল সংগ্রহ করছিলেন, সেসময় পর্তুগালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আন্তনিও কোস্টা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে একটি সিডি কেসেট কিনেছিলেন।

এক মধ্যাহ্নভোজ অনুষ্ঠানে কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও লিসবন সিটি কাউন্সিলর রানা তসলিম উদ্দিনের কাছে ওই স্মৃতিচারণ করেছিলেন আন্তনিও কোস্টা। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ লিসবনের কেপ ভার্দে (আফ্রিকা) অ্যাসোসিয়েশনের ওই মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তনিও কোস্টাকে বাংলাদেশ সফরের আহ্বান জানান রানা তসলিম উদ্দি। জবাবে আন্তনিও কোস্টা বলেন, ‘দাওয়াত পেলে অবশ্যই যাব। বাংলাদেশে ভ্রমণ করার আগ্রহ আশার আছে।’

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সজিব গ্রুপের এ জি এম (এক্সপোর্ট) জিয়াউর রহমান নিপু, পর্তুগাল মাল্টিকালচ্যারাল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল আহম্মেদ ও তরুণ প্রবাসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তানভীর আলম জনি।

১৯৭১ এর বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশের পার্থক্য বুঝাতে গিয়ে রানা তসলিম উদ্দিন উল্লেখ করেন, কীভাবে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ। কীভাবে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কীভাবে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয় দিয়েছে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হলো কীভাবে- তারও বিশদ ব্যাখ্যা দেন তিনি। কথাগুলো তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনেন ও প্রশংসা করে বলেন, ‘পর্তুগালেও আপনাদের কমিউনিটির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।’

portogul-1

এ সময় পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটির গত ত্রিশ বছরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ব্যাখ্যা করেন রানা তসলিম উদ্দিন। পর্তুগালের অর্থনীতিতে বাংলাদেশিদের অবদানের কথা বলেন এবং পর্তুগালে আমাদের জনসংখ্যার খতিয়ান তুলে ধরেন। এ সময় বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন অসুবিধার কথা উল্লেখ করেন এবং নির্মাণাধীন মসজিদ নিয়েও কথা বলেন। আন্তনিও কোস্টা তৎক্ষণাৎ লিসবনের মেয়রকে ফোন করে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চান। তাছাড়া বাংলাদেশি পর্তুগিজ ভোটারদের সংখ্যা নিয়েও কথা হয়।

প্রধানমন্ত্রী আন্তনিও কোস্টা তার প্রায় ২০ মিনিটের বক্তব্যে পর্তুগালের ইমিগ্রান্টদের নিয়ে কথা বলেন। বর্ণবাদ নিয়ে কথা বলতে যেয়ে তিনি বলেন, ‘সারা দুনিয়া বর্ণবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে, বিবৃতি দেয়, কিন্তু আমি কাজ করে দেখাই, আমার শাসন আমলে নিগ্রোদের পার্লামেন্টে ঠাই দিয়েছি, জিপ্সিদের পার্লামেন্টে এনেছি। শারীরিক অক্ষমদের কেবিনেটে রেখেছি, যা পর্তুগালে কখনো ছিল না।’

সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার ছিল, বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রান্টদের কথা বলতে গিয়ে তিনি প্রথমেই বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করেন, অথচ এখানে বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের মানুষ বসবাস করেন।

আসন্ন ৬ অক্টোবর ২০১৯ পর্তুগালের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১০-১২ জন প্রার্থী, দুই জন মিনিস্টার, সোস্যালিস্ট পার্টির উচ্চস্তরের নেতৃবৃন্দ, পর্তুগালের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও কেপভার্দে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসহ পর্তুগালের বিভিন্ন জাতীয় টিভি চ্যানেল ও পত্রিকার সাংবাদিকরা ওই মধ্যাহ্নভোজে উপস্থিত ছিলেন।

রানা তসলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ কমিউনিটির মুখপাত্র হয়ে, বাংলাদেশ ও এখানকার মানুষের কথা বলতে পেরে, নিজ দেশের অর্জন অন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলতে পারার জন্য আমাদের কমিউনিটির কাছে, প্রধানমন্ত্রী আন্তনিও কোস্টার কাছে, সর্বোপরি কেপ ভার্দে অ্যাসোসিয়েশনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here