নিষেধাজ্ঞা তুলে দিল ভারত, সীমান্ত খুলে দিয়েছে মিয়ানমার

0
85

বাংলা খবর ডেস্ক: দেশে নতুন পিয়াজ আসছে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার পর ব্যবসায়ীরা নতুন পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। মিয়ানমার, তুরস্ক, মিসর থেকেও নতুন পিয়াজ আসছে। কর্ণাটক রাজ্যে উৎপাদিত বেঙ্গালুরু জাতের পিয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরও দেশটিতে পণ্যটির দরপতন ঠেকানো যাচ্ছে না। গতকাল বিভিন্ন রাজ্যে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে কেজিপ্রতি ৭ থেকে ৮ রুপিতে পণ্যটি বিক্রি হয়েছে। এদিকে ভারতে যখন পিয়াজের দাম  তলানিতে তখন বাংলাদেশে উল্টো এর দাম বাড়ছে। গতকালও পণ্যটি প্রতিকেজি কমবেশি ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

দেশের ব্যবসায়ী এবং সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ অবস্থা থাকবে না, নতুন পিয়াজ এসে গেলে খুব দ্রুত পিয়াজের দাম কমে যাবে। দুয়েক দিনের মধ্যে ভোক্তারা কম দামে পিয়াজ কিনতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। কৃষকের চাপে গত ২৮ অক্টোবর কর্ণাটক রাজ্যে উৎপাদিত বেঙ্গালুরু পিয়াজের ওপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ভারত। দেশটির বাণিজ্য দফতরের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখা এক আদেশে নভেম্বর মাসের জন্য শুধু ‘বেঙ্গালুরু গোলাপি পিয়াজ’ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ভারতের এই আদেশটি ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। প্রতি চালানে ৯ হাজার মেট্রিক টন করে শুধু চেন্নাই বন্দর দিয়ে এই পিয়াজ রপ্তানি করা যাবে।

এদিকে ভারতের পাশাপাশি পিয়াজ রপ্তানির জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে মিয়ানমার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, আগে বর্ডার ট্রেডের মাধ্যমে ৬০০ থেকে ৭০০ মেট্রিক টন পিয়াজ আমদানি করা যেত মিয়ানমার থেকে। এখন তারা প্রতি চালানে এক হাজার টন করে পিয়াজ দিতে চাচ্ছে। মিয়ানমারের পাশাপাশি মিসর ও তুরস্ক থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজের চালান দুয়েক দিনের মধ্যে বন্দরে ভিড়বে। ফলে দ্রুত পিয়াজের দাম কমতে শুরু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্য সচিব।

ভারতে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতি কেজি ৭ রুপিতে পিয়াজ বিক্রি : এশিয়ার পিয়াজের সবচেয়ে বড় বাজার ভারতের লাসাগাঁওয়ে পিয়াজের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে গেছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে ৬ থেকে ১০ রুপি কেজি দরে পণ্যটি বিক্রি করছেন। ইন্ডিয়া মার্টের অনলাইনে গতকাল রেড অনিয়ন বা লাল পিয়াজের মূল্য লেখা ছিল কেজি প্রতি ৭ রুপি। পুনের ডিলাইট ফ্রেশ-এর অনলাইন শপে এই মূল্যতালিকা লেখা ছিল। আর আহমেদাবাদে খোদিয়ার ওভারসিজ ট্রেড অনলাইন শপে গতকাল প্রতিকেজি পিয়াজের মূল্য ছিল সাড়ে ৮ রুপি। ভারতীয় পিয়াজ ব্যবসায়ীদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের আমদানিকারকরা জানান, ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে একযোগে পিয়াজের উৎপাদন বাজারে চলে আশায় ব্যাপকভাবে পণ্যটির দরপতন হয়েছে। এর ফলে উৎপাদনকারী কৃষকেরা পণ্যটির ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আসছে মুড়িকাটা পিয়াজ : বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পিয়াজ পচনশীল পণ্য। উৎপাদনের পর এটি বেশি দিন মজুদ রাখতে পারে না কৃষক। ফলে একযোগে বাজারে পণ্যটির চালান চলে আসে। এ অবস্থায় কেউ চাইলেও এখন আর মজুদ রেখে দাম বাড়াতে পারবে না। শুধু তাই নয়, দেশে ‘মুড়িকাটা’ নামে আগাম এক জাতের পিয়াজ উৎপাদন হয়। সেটিও চলতি মাসের শেষের দিকে বাজারে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

তারা জানান, সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের ১৫ দিনের মধ্যে এ পিয়াজ জমিতে রোপণ হয়। নভেম্বরের শেষের দিকে এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে এ জাতের প্রায় ১৮ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ পাওয়া যায়, যা সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here