বাংলা খবর ডেস্ক: ডেঙ্গু এখন আতঙ্কের নাম। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে অনেক মানুষ। সেই প্রাণঘাতী ডেঙ্গুর জ্বর ছড়ানোর বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে স্পেন। দেশটির দাবি, দুজন পুরুষের যৌন মিলনের মধ্য দিয়ে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
স্পেনের চাঞ্চল্যকর এই তথ্যের পর ডেঙ্গু সংক্রমণের এই পদ্ধতিকে ‘অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত’ হিসেবে বর্ণনা করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র (ইসিডিসি)। তারা বলছে, ঘটনা সত্যি হলে এটি হবে পুরুষে-পুরুষে যৌন মিলনে ডেঙ্গু ছড়ানোর প্রথম ঘটনা।
গণমাধ্যমের খবরের ভিত্তিতে স্টকহোমভিত্তিক সংস্থাটি বলছে, গত সেপ্টেম্বরে মাদ্রিদ পৌর এলাকার দুই পুরুষ বাসিন্দার মধ্যে ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার খবর দিয়েছে স্পেন। যাদের পরস্পরের মধ্যে যৌন মিলন হয়েছিল।
এদের মধ্যে সম্প্রতি যে ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি স্পেনের বাইরে যাননি। আর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে এই ব্যক্তির মধ্যে ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা যায়। এ ছাড়া ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু নিশ্চিত হয়।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে তার পুরুষ সঙ্গীর মধ্যে একই লক্ষণ দেখা গিয়েছিল, যাকে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এই ব্যক্তি আগস্টে ও সেপ্টেম্বরের শুরুতে কিউবা ও ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে গিয়েছিলেন।
মাদ্রিদ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা সুজানা জিমেনেজকে উদ্ধৃত করে দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪১ বছর বয়সী ওই পুরুষের পুরুষ সঙ্গী কিউবা ভ্রমণে গিয়ে মশার কামড়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।
ইসিডিসির এক স্বাস্থ্য বুলেটিনে সম্প্রতি আক্রান্ত জনের সংক্রমণকে ‘অটোচথনাস (স্থানীয়ভাবে সৃষ্ট)’ হিসেবে এবং আগের জনের ঘটনাকে ‘আমদানিকৃত’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
আক্রান্ত ওই দুজনের বাসস্থান ও আশপাশের এলাকায় পতঙ্গতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে নেতিবাচক ফল পেয়েছে স্পেন। অর্থাৎ সেখানে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক এইডিস (এইডিস অ্যালবাপিক্টাস) মশার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
স্পেনের গবেষকরা বলছেন, জেনেটিক সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে উভয় ব্যক্তির ভাইরাসের জীবতাত্ত্বিক ধরন অভিন্ন বলে প্রমাণিত হয়েছে। আরও তদন্ত করে ভাইরাসটি কিউবায় বিস্তৃতি পাওয়া ডেঙ্গু ভাইরাসের মতোই বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
স্পেনে পর্যালোচনা তুলে ধরে ইসিডিসি বলছে, বাহকের মাধ্যমে সংক্রমণ বা ডেঙ্গুর সংক্রমণের জ্ঞাত অন্য মাধ্যমের সমর্থনে কোনো ডেটা না থাকায় ‘অটোচথনাস’ ঘটনাটিকে সম্ভাব্য ‘যৌন সংক্রমণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
মাদ্রিদের কর্মকর্তা সুজানা বলেন, নারী ও পুরুষের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে সম্ভাব্য ডেঙ্গু সংক্রমণের বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ইউরোপের সংস্থাটির নিজের মূল্যায়ন হলো- এমসিএমের মধ্যে নিশ্চিতভাবে ডেঙ্গু সংক্রমণের কোনো ঘটনা তাদের জানা নেই। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ পদ্ধতি অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত।
চলতি বছরে এবারই প্রথম ঢাকাসহ ৬৪ জেলায় এই রোগ ছড়িয়েছে। এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক মানুষ মারা গেছে।