অদ্ভুতুড়ে সব কান্ড ঘটে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে

0
691


মাহফুজুর রহমান:
অদ্ভুতুড়ে সব কান্ড ঘটে নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। এখানে সংবাদপত্র বা গণমাধ্যম জগতে চলছে মহা বুজরুকী। এখানে সাংবাদিক হতে কিছু লাগে না। প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা ছাড়া কেউ কোন দেশে সাংবাদিকতা করেছেন কিনা তা কারো জানা নেই। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতার কোন বালাই নেই নিউইয়র্কে সাংবাদিকতা করতে। আর সবচেয়ে মজার বিষয় সাংবাদিক হবার চেয়ে আরো সহজ বিষয় হচ্ছে সম্পাদক হওয়া। এরজন্য শুধু প্রয়োজন গ্যাঁটের পয়সা খরচ করে একটি সাপ্তাহিক, পাক্ষিক বা মাসিক- না হলে একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরী করে ফেলা। আর ২৫ ডলার দিয়ে কয়েক হাজার বিজনেস কার্ড ছেপে আপনি হয়ে যাবেন সম্পাদক অথবা প্রধান সম্পাদক। তারপর আপনাকে পায় কে? যেকোন সংবাদ সম্মেলন বা অনুষ্ঠানে আপনি অবলীলায় বসে পরবেন সাংবাদিকের জন্য রাখা আসনে। আর এমন সম্পাদক-সাংবাদিকদের উৎপাত এখন এমন বেড়েছে যে তাদের সংখ্যাধিক্যে নিউইয়র্কে বড়সরো সংবাদ সম্মেলনে পেশাদার সাংবাদিক বা সম্পাদকরা জায়গা পান না। আর সস্তা ও স্থুল কভারেজ (অপেশাদারী) পাবার জন্য নব্য ও অনভিজ্ঞ সংগঠকদের কাছে এমন সম্পাদক-সাংবাদিকদের দারুন কদর আজকাল। আর এই কদরের জোরে এরা সাংবাদিকতা পেশা ও সংবাদপত্র শিল্পকে এতো নীচে নামিয়েছেন যে পেশা ও ব্যবসা হিসাবে সংবাদপত্র এখন নিউইয়র্কে হুমকীর সম্মূখীন।

এখানে কেউ সারাদিন একটি অড বা যেকোন জব করে দিনের শেষে সাংবাদিকের লেবাস লাগিয়ে অবলীলায় কমিউনিটিতে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। আবার কেউ তেমনই অড জব করে শ’পাঁচেক টাকা খরচ করে সপ্তাহে একটি চটি পত্রিকা বের করে নিজেকে পত্রিকা মালিক-সম্পাদক বা প্রধান সম্পাদক ঘোষণা দিয়ে সাংবাদিক বনে যাচ্ছেন। এইসব চটি পত্রিকাগুলো প্রকাশে আবার ঢাকার কোন কোন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বিরাট ভূমিকা রাখছেন। তারা শুধু কন্টাক্টে পত্রিকা মেকআপ (ডিজাইন) করে দেন না, অজ্ঞদের পক্ষে সকল প্রকার সংবাদ নির্বাচন করে বসিয়ে দেন। তার সাথে এক চিমটে লবণের মত প্রবাসের কিছু নিউজ সেঁটে দিয়ে পত্রিকা প্রেসের সার্ভারে দিয়ে দেন। আর এভাবে হয়ে যায় পত্রিকা। তারপর সেই পত্রিকা বগলদাবা করে মালিক-সম্পাদক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও কদর দেনেওয়ালাদের পিছন পেছন ঘুরে বনে যান বিশিষ্ট সাংবাদিক-সম্পাদক (!)।
লেখক: সম্পাদক, সাপ্তাহিক বর্ণমালা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here