পূজার স্থান ছেড়েই ভোটকক্ষ সাজাবে ইসি

0
408

বাংলা খবর ডেস্ক: সরস্বতী পূজা নির্বিঘ্নে উদ্যাপনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনে ভোটকক্ষ সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই মধ্যে উত্তর সিটির ২৭টি ও দক্ষিণ সিটির ২৬টি কেন্দ্রে পূজা উদ্যাপিত হবে বলে কমিশন চিহ্নিত করেছে। ওইসব কেন্দ্রে পূজা উদ্যাপনের নির্ধারিত স্থান বা কক্ষে ভোটকক্ষ বানাবে না ইসি।

নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার এক অনানুষ্ঠানিক কমিশন সভায় ঢাকার দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের দিন ভোটারদের যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রাইভেট কার চলাচলের নিষেধাজ্ঞা শিথিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বৈঠকের পর ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, কতগুলো কেন্দ্রে পূজা হয় তার একটি খসড়া তালিকা নিয়েছি। এতে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ হাজার ৩১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৭টি ও দক্ষিণ সিটির ১ হাজার ১৫০টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৬টিতে পূজা উদ্যাপন হয়। আমরা আরও তথ্য নিয়েছি, কোন জায়গায় পূজা হয়।

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, অগ্রণী বালিকা বিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে পূজা করে, ক্লাসরুমে পূজা করে না। ওই প্রতিষ্ঠানের কিছু কক্ষে ভোটকক্ষ এমনভাবে স্থাপন করব যাতে ভোটের কারণে পূজার সমস্যা না হয়, পূজার জন্য ভোটের সমস্যা না হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানিয়েছেন, ভোট ও পূজা করতে কোনো সমস্যা নেই।

সচিব বলেন, পূজা কিন্তু ২৯ জানুয়ারি। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকের সঙ্গেই কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, পূজা ২৯ তারিখেই শেষ। কেউ কেউ মনে করেন, পূজা ৩০ জানুয়ারির ১১টা পর্যন্ত সময় আছে।

আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনুরোধ করব, তারা যেন কোনো বিভ্রান্তির কবলে না পড়ে, কোনোরকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে, যেন লেখাপড়ায় মনোযোগ দেয়। কারণ এটা দেখার জন্য দেশের অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন। আদালত রোববার আপিলের রায় দেবেন। কাজেই ছাত্রদের এটা নিয়ে সময় নষ্ট করা উচিত নয়। তিনি বলেন, আপিল করেছি। আপিলে শুনানি করতে আমরা আইনজীবী নিয়োগ করেছি। আদালত থেকে যে আদেশ আসবে সে অনুযায়ী কাজ করব।

বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে সচিব বলেন, নির্বাচনের দিন শুধু ভোট দেয়ার জন্য প্রাইভেট কার ব্যবহার করা যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য পুলিশকে দেখাতে হবে।

তিনি বলেন, এক এলাকায় বসবাস করে কিন্তু ভোটার অন্য এলাকার। তারা তাদের প্রাইভেট কার নিয়ে ভোট দিতে পারবেন। যদি পুলিশ ধরে, বাসার ঠিকানা আর ভোটার আইডি কার্ড দেখিয়ে বলতে হবে যে ভোট দিতে আসছি, তাহলেই চলাচল করতে পারবে। এ ছাড়া ভোটের দিন ঢাকা থেকে বহিরাগতদের বের করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে সচিব বলেন, ঢাকা শহর থেকে বহিরাগতদের বের করার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ঢাকা শহরে সারা দেশ থেকে লোকজন আসেন। তাদের বের করা সম্ভব না।

আচরণবিধি লঙ্ঘনে ইসি কী পদক্ষেপ নিচ্ছে- জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দেখবেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ তারা নিয়েছেন। শাস্তিও দিয়েছেন। যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন, তাদের জরিমানা করা হয়েছে। তারপর সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বিধি ভঙ্গ করলে আরও কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। ক্রমান্বয়ে কঠোর হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র যাদের কাছে তাদের ধরতে জোর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচন নিয়ে খারাপ কোনো পরিস্থিতির রিপোর্ট নেই। সবই ভালো। খুবই আনন্দ-উৎসবমুখর পরিবেশে সব প্রার্থী প্রচার চালাচ্ছেন।

ইভিএম নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, প্রস্তুতি সন্তোষজনক। কোনো চ্যালেঞ্জ নাই। তবে প্রার্থীরা যত সক্রিয় থাকবেন ভোটার উপস্থিতি তত বাড়বে। অনেকেই ভোট নয়, পরিচিতি বাড়ানোর জন্য প্রার্থী হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here