তিন বাহিনী নিয়ে ‘সংযুক্ত কমান্ড’ গড়ছে ভারত

0
78

বাংলা খবর ডেস্ক: বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখে ভারতীয় সামরিক বাহিনী। স্থল, নৌ এবং বিমান বাহিনীর আলাদা আলাদা কমান্ড আর নয়, ‘ইন্টিগ্রেটেড’ বা ‘সংযুক্ত কমান্ড’ তৈরি হতে চলেছে দেশের প্রত্যেকটি প্রান্তের জন্য। যে কোনো পরিস্থিতির মোকাবিলা বা যে কোনো মুহূর্তে অভিযানের জন্য বাহিনীকে সর্বক্ষণ প্রস্তুত রাখতেই কাঠামো এভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।

চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়ত গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। স্থলবাহিনীর প্রধান পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরে দেশের প্রথম সিডিএস পদে আসীন হয়েছেন জেনারেল বিপিন রাওয়ত।

তিনি জানান, দেশের সশস্ত্র বাহিনী খুব বড় পরিবর্তনের সামনাসামনি হতে চলেছে। তিন বাহিনীকে একটি অবিচ্ছিন্ন সশস্ত্র বাহিনী’তে পরিণত করা আমাদের লক্ষ্য। নতুন যে ‘মিলিটারি কমান্ড’ গুলি তৈরি হতে চলেছে, সেগুলিতে তিন বাহিনীর সবরকমের যুদ্ধক্ষমতা, পরিবহন ব্যবস্থা এবং লোকবলকে একছাতার নিচে আনা হবে।

অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা কর্নেল সৌমিত্র রায় বলছেন, ‘এখন ভারতের সশস্ত্র বাহিনী তিনভাগে বিভক্ত একটি বাহিনী হিসেবে কাজ করে। বাহিনীকে বিভিন্ন কমান্ডে ভাগ করেই রাখা হয়েছে। কিন্তু দেশের সব অংশেই নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী আলাদা আলাদা কমান্ড। কোনো অভিযান চালাতে হলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হলে তিন বাহিনীর বিভিন্ন রকম সক্ষমতাকে প্রয়োজন অনুসারে একছাতার তলায় আনার কাজ শুরু হয়। কিন্তু এটা একটা প্রচীন পদ্ধতি। আধুনিক অভ্যাস অন্যরকম। সেই অভ্যাস রপ্ত করার প্রক্রিয়াটাই শুরু হচ্ছে’।

পাকিস্তান সীমান্তে ওয়েস্টার্ন কমান্ড এবং সাউথ-ওয়েস্টার্ন কমান্ড, উত্তরে অর্থাৎ তিব্বত ও নেপাল সীমান্তে নর্দার্ন কমান্ড, পূর্বে অর্থাৎ চীন, ভুটান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার সীমান্তে ইস্টার্ন কমান্ড, দক্ষিণ ভারতের জন্য সাদার্ন কমান্ড-এমন নানা ভাগ রয়েছে ভারতের স্থলসেনা ও বিমানবাহিনীতে।

নৌবাহিনীতেও ইস্টার্ন, ওয়েস্টার্ন এবং সাদার্ন কম্যান্ড রয়েছে। কিন্তু তিন বাহিনীর এই সব কম্যান্ড আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে বা কোনও প্রতিপক্ষের সামরিক সঙ্গে সঙ্ঘাতে যেতে হলে প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করে এই তিন বাহিনীর নানা অংশকে এক ছাতার তলায় আনতে হয়। তার পরেই পুরোদস্তুর অভিযান শুরু করা যায়।

বিএসএফের অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি সমীর মিত্রও একই কথা বলছেন। তার মতে, ‘অপারেশনাল রেডিনেস বা যে কোনও মুহূর্তে যে কোনো পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রশ্নে ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড খুব জরুরি। সেই লক্ষ্যেই বাহিনীর কাঠামোয় এই বড়সড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে আমার মনে হয়’।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর কাঠামোয় এই বিরাট পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়া কতদিনে শেষ হবে জানতে চায়লে তিনি বলেন, এটা ছোটখাট বিষয় নয়। কাগজে-কলমে লিখে দিলাম আর ইন্টিগ্রেটেড থিয়েটার কম্যান্ড তৈরি হয়ে গেল, বিষয়টা এমন নয়। ওয়েস্টার্ন থিয়েটারের প্রয়োজনীয়তা এক রকম। ইস্টার্ন থিয়েটারে আর এক রকম। এসব প্রয়োজনীয়তা বুঝে এবং চিহ্নিত করে নিয়ে তিন বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটকে একে একে বিভিন্ন কমান্ড হেড কোয়ার্টারে পাঠাতে হবে।

তিনি বলেন, সেখানে নানা রকমের প্রশিক্ষণ হবে। একছাতার তলায় এসে তিন বাহিনী কীভাবে একসঙ্গে কাজ করবে, কীভাবে একে অপরের পরিপূরক হবে এবং কী প্রক্রিয়ায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠবে, তা নিয়ে বার বার এক্সারসাইজ বা যুদ্ধাভ্যাস হবে। তবে গিয়ে থিয়েটার কমান্ড তার পূর্ণ কার্যকারিতায় পৌঁছাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here