শ্রীপুরে ব্যবসায়ী খুন: চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন চতুর্থ স্ত্রী সামিরা

0
697

বাংলা খবর ডেস্ক: গাজীপুরের শ্রীপুরে ব্যবসায়ী আবদুর রহমানের (৪৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় র‌্যাবের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন প্রধান আসামি স্ত্রী সামিরা আক্তার। মূলত স্বামীর অবৈধ দাবি পূরণের ক্ষোভ থেকে এ হত্যার পরিকল্পনা করেন আবদুর রহমানের চতুর্থ স্ত্রী সামিরা।

নিহতের স্ত্রীসহ দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছেন র‌্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের সদস্যরা।

সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় রাজধানীর দক্ষিণখান (কোটবাড়ি) এলাকায় তার চাচার বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব- ১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ব্যাবসায়ী আবদুর রহমানের চতুর্থ স্ত্রী প্রধান আসামি সামিরা আক্তার (২৬) ও তার বাবা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার আলী হোসেন (৫৫)।

লে. কমান্ডার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গোপন সংবাদে জানা যায় ব্যবসায়ী আবদুর রহমান হত্যার প্রধান আসামি সামিরা আক্তার ওই এলাকায় আত্মগোপন করে আছেন।

এর ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামি সামিরা আক্তার জানান, গত সোমবার রাতে ব্যবসায়িক পার্টনার রতন মিয়ার সঙ্গে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক যৌন কাজে লিপ্ত করেন স্বামী আবদুর রহমান।

পরে রতন রাত ১১টায় বাসা থেকে চলে গেলে রাত ৩টায় সামিরা বাসায় থাকা ধারালো দা দিয়ে ঘুমন্ত স্বামী আবদুর রহমানকে গলা কেটে হত্যা করে।

পরে না চেনার জন্য মরদেহের মুখে অ্যাসিড দিয়ে ঝলসে দেয় এবং মরদেহ তোশক দিয়ে মুড়িয়ে রাখেন। ঘটনার পর মরদেহ সরিয়ে ফেলতে সামিরা তিন দিন ওই ভাড়া বাসায় অবস্থান করেন।

পরে মরদেহ সরাতে ব্যর্থ হয়ে মা-বাবার সহযোগিতায় বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এর পর পাশের কালিয়াকৈর উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের এক বান্ধবীর বাসায় দুদিন আত্মগোপন থাকার পর শনিবার নওগাঁয় মামার বাসায় অবস্থান করতে থাকেন।

পরে রোববার দক্ষিণখান (কোটবাড়ি) এলাকায় তার চাচার বাসায় আত্মগাপন করেন।

আসামি সামিরা আরও জানান, আবদুর রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে টঙ্গীতে বসবাস করতেন। সামিরা ২০১৬ সালে টঙ্গী সরকারি কলেজের ডিগ্রি পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং আবদুর রহমান তার পূর্ব পরিচিত ছিলেন।

এ ছাড়া তিনি আবদুর রহমানের টঙ্গীর বাসায় থেকে ডিগ্রি পরীক্ষাও দেন। এ সুযোগে ভিকটিম তাকে বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার ধর্ষণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।

পরে তাকে কৌশলে তার টঙ্গীর বাসায় খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ পান করিয়ে অজ্ঞান করে ধর্ষণ করেন এবং এর ভিডিও ধারণ করেন আবদুর রহমান।

পরে ওই ধর্ষণের ভিডিও এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে আবদুর রহমান তাকে বিভিন্ন সময় দিনের পর দিন নিপীড়ন করেন। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ায় সামিরার প্রথম স্বামী তাকে ডিভোর্স দেন। এর পর থেকে সামিরা শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুর এলাকায় একটি ওষুধের দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।

গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভিকটিম আবদুর রহমান সামিরাকে বিয়ে করেন এবং তাকে নিয়ে শ্রীপুর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন। বিয়ের পর থেকে আবদুর রহমান ব্যবসায়িক স্বার্থে আবার কখনও বিপুল টাকার বিনিময়ে তার পার্টনারদের সঙ্গে ঘটনার দিন পর্যন্ত স্ত্রী সামিরাকে যৌন কাজে বাধ্য করেন।

এসব নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সামিরা স্বামী আবদুর রহমানের কাছে ডিভোর্স চাইলে ভিকটিম সামিরাসহ তার মা ও ভাইকে খুন করার হুমকি দেন। এ ঘটনার জেরে স্ত্রী সামিরা আবদুর রহমানের ওপর প্রতিশোধ নিতে তাকে খুন করতে বাধ্য হন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here