রাতের আঁধারে পিকআপে চড়ে ঢাকার পথে পোশাক শ্রমিকরা

0
93

নিউজ ডেস্ক: করোনার সাধারণ ছুটির মধ্যেই খুলতে শুরু করেছে তৈরি পোশাক কারখানা। আজ থেকে খুলবে আরও অনেক কারখানা। তাই চাকরি বাঁচাতে হাজার হাজার শ্রমিক গ্রাম থেকে ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু সড়কে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন তারা। আতঙ্কে আছেন করোনা সংক্রমণের।

শনিবার সকাল থেকেই ময়মনসিংহ থেকে শ্রমিকরা দলে দলে ঢাকায় যাওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশি বাধার মুখে পড়েন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। পরে রাতের আঁধারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন অনেকে।

কয়েকজন শ্রমিক জানান, রবিবার সকালে গার্মেন্টস কারখানায় কাজে যোগ না দিলে ‘চাকরি যাওয়ার’ হুমকি আছে।

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি সিদ্ধান্তে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি যানবাহন ছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল করছে পণ্যবাহী পরিবহন।

ময়মনসিংহে শনিবার দিনের বেলা পোশাক শ্রমিকদের বাড়ির দিকে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। তবে ফিরে না গিয়ে রাস্তার পাশে অবস্থান করতে থাকেন অনেকেই। রাতে তারা পিকআপ ভ্যানে ঢাকার পথে রওনা হন।

এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘সকাল ৭টার আগেই কাজে যোগদান করতে হবে। সঠিক সময়ে না গেলে চাকরি চলে যাবে। তাই রাতেই বাচ্চা কোলে নিয়ে টঙ্গীর পথে রওনা দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘পিকআপ ভ্যানে করে টঙ্গীর পথে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কোনো গাড়ি নাই তাই ভাড়াও দ্বিগুণ দিতে হবে।’

আরেকজন নারী পোশাক শ্রমিক বলেন, নেত্রকোণা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত আসছি অটো (ইজিবাইক) দিয়ে। এখানে এসে পড়েছি পুলিশের বাধায়। যেভাবেই হোক সকাল ৭টার মধ্যে কারখানায় উপস্থিত থাকতে হবে। না হলে চাকরি থাকবে না।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে গার্মেন্টস খোলার কোনো নির্দেশনা নেই। এ কারণে শ্রমিকদের যেতে আমরা বাধা দিচ্ছি।’

রাতেও কিছু শ্রমিক সিএনজি, পিকআপে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে, নির্দেশনা পেলেই গার্মেন্টস কর্মীদের যেতে দেওয়া হবে।’

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। তবে এই সময়ে পোশাক কারখানাগুলো খোলা রাখা হয়। ২৮ ও ২৯ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

সরকার সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ালেও মালিকরা ৫ এপ্রিল কারখানা খোলা রাখার ব্যাপারে অটল থাকেন। কিন্তু এই সময়ে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় চাকরি বাঁচাতে অসংখ্য শ্রমিক পায়ে হেঁটে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়।

এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হলে ৫ এপ্রিল রাতে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত আবারও কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় মালিকপক্ষ। এরপর তারা সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে কারখানা বন্ধ করে আসছে।

সরকারের সাধারণ ছুটি আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলেও কারখানামালিকরা ছুটির মেয়াদ আর বাড়ায়নি। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা গ্রাম থেকে ফিরতে শুরু করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here