নিউজ ডেস্ক: অবশেষে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (মমেক) শুরু হতে যাচ্ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা। মমেকের নতুন একটি ভবনকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতিও পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১ মে) জেলা সিভিল সার্জন এবিএম মশিউল আলম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক সভা হয়। এতে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ওই সভার সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ময়মনসিংহে অন্য কোনো সুবিধাজনক স্থানে সরকারি ভবন পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল স্থাপনে বিলম্ব হয়েছে। তবে করোনা প্রতিরোধে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। এখানে ৫০০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে।’
সিভিল সার্জন জানান, আগের সভায় বক্তারা করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেন। ময়মনসিংহে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের চিকিৎসার প্রস্তুতি হিসেবে এখনই করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল নির্ধারণের কথা বলেন। পরে সভায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আটতলা নতুন ভবনটিকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হয়। ওই সুপারিশ বিবেচনায় নিয়ে শুক্রবার স্বাস্থ্য বিভাগ এই প্রস্তাব অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়।
বিলম্বে হলেও করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল স্থাপনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএমএ ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি ডা. মো. মতিউর রহমান ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের ফলে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে। কারণ, এই হাসপাতালে আইসিইউ, ভেন্টিলেটর এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেনসহ সব ব্যবস্থা রয়েছে।’
হাসপাতালের উপ-পরিচালক লক্ষ্মী নারায়ণ মজুমদার জানান, করোনা প্রতিরোধ জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক হাসপাতালে নতুন আটতলা ভবন করোনা ডেডিকেটেড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই নতুন ভবন থেকে রোগীদের সরিয়ে পুরনো ভবনে নেওয়া হবে।
এর আগে ময়মনসিংহ শহরের এসকে হাসপাতালে প্রথমে ৩০ শয্যা ও পরে ৭০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়। একই সঙ্গে সদরের পরানগঞ্জ হাসপাতালে ৩০ শয্যা এবং মুক্তাগাছার শারীরিক শিক্ষা কলেজে ৫০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত আছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আরও ২৪০ শয্যার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য উপজেলা মিলিয়ে সর্বমোট সাড়ে চারশ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৮১ জন। তাদের মধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২।