রহমান মাহবুব, নিউইয়র্ক:
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব চলার সময় ও এর পরবর্তী ছয় মাস বাড়ি ভাড়া এবং মর্টগেজের কিস্তি সম্পূর্ণ বাতিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন কুইন্সের কয়েকজন আইনপ্রণেতা। গ্রেস মেং, আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ক্যারোলিন ম্যালোনি, নাঈদা ভেলাজকোয়েজ ও হাকিম জেফরির যৌথভাবে এই দাবি তুলে তা প্রস্তাব করেছেন। ৫ এপ্রিল প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেটে এ মর্মে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন তাঁরা। এতে বিষয়টি আগামী প্রণোদনা প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটিতে আরও পাঁচজন নিউইয়র্ক নগর কংগ্রেস সদস্যও স্বাক্ষর করেছেন।
আইনপ্রণেতারা বলছেন, ‘এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে করোনা মহামারির লকডাউন। বেকারত্ব ব্যাপক হারে বেড়েছে। এ অবস্থায় বাড়ি ভাড়া এবং মর্টগেজের কিস্তি সম্পূর্ণ রূপে মার্জনা না করলে, অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে।’
প্রস্তাবে বলা হয়, ‘নিউইয়র্কের সিংহভাগ মানুষ পে চেক টু পে চেক আয় করেন। অধিকাংশ পরিবারের কোনো সঞ্চয় থাকে না বললেই চলে। তাঁদের জন্য এ লকডাউনের প্রভাব ভয়াবহ হয়ে উঠছে। মানুষ প্রতিদিন খাবার জোগাড় করে টেবিলে রাখার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলবে। ওষুধ কিনতে পারবে না। মানুষ অন্যান্য দৈনন্দিন ব্যয়ভার বহন করতে হিমশিম খাবে।’ এতে আরও যুক্ত করা হয়, ‘অধিকন্তু অঙ্গরাজ্যগুলোর বেকার ভাতা সিস্টেম অতিরিক্ত চাপে উদ্বেলিত হওয়ার কারণে কোটি মানুষ তাঁদের আয়ের উৎস হারিয়ে ফেলবে।’
প্রস্তাবে আরও বলা হয়, প্রস্তাবিত এ প্রোগ্রামের অধীনে একটি তহবিল করা হবে। যা থেকে ভাড়া না পাওয়ার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট বিভাগ কর্তৃক বাড়ির মালিক ও অ্যাপার্টমেন্ট মালিকদের অর্থ পরিশোধ করা হবে। এতে সর্বজনীন এ প্রোগ্রামটি আমলাতান্ত্রিক বিধিনিষেধ ও ঝামেলামুক্ত হবে। প্রণোদনার অর্থ কেউ পাবে, আবার সময়মতো অনেকে পাবে না। ঘর ভাড়া কীভাবে পরিশোধ করবে, এমন দুশ্চিন্তা এতে থাকবে না। বাড়ির যেসব মালিক, মর্টগেজ কোম্পানি এবং ব্যাংককে কিস্তি পরিশোধ করতে হয়; একই প্রোগ্রামের অধীনে তাঁদেরও কিস্তি মাফ করা হবে। এভাবে বাড়ির মালিকদের পরিবারগুলোর মাথার ওপর ছাদ থাকবে। বাড়ি নিলাম হওয়া থেকে রক্ষা হবে।
প্রাইভেট হাউসের ভাড়াটিয়া যাদের চলতি লিজ আছে, প্রাইভেট হাউসের ক্ষুদ্র মালিক, পাবলিক হাউস কর্তৃপক্ষ এবং কো–অপারেটিভ হাউজিং সংস্থা এ প্রোগ্রামের আওতায় সুবিধা পাবেন।
পুরো প্রোগ্রামটিতে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে, এ বিষয়ের উল্লেখ নেই প্রস্তাবে। তবে ওকাসিও-কর্টেজের মুখপাত্র লওরেন হিট্ট নিউইয়র্ক পোস্টকে জানিয়েছেন, শুধু রেন্ট বাতিলের প্রোগ্রামে মাসিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার খরচ পড়বে।
সূত্র: প্রথম আলো