ব্রিটেনে মৃতের সংখ্যা নিয়ে গোপন তথ্য ফাঁস

0
130

বাংলা খবর ডেস্ক:
ব্রিটেনে কোভিড১৯-এ মৃতের যে পরিসংখ্যান প্রতিদিন দেয়া হচ্ছে জানা যাচ্ছে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা এর প্রায় দ্বিগুণ। ১ মে তারিখ পর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার মৃতের যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তাতে বলা হচ্ছে ওই তারিখ পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে মারা গেছে ২৮ হাজার মানুষ।

কিন্তু ওই তারিখ পর্যন্ত সরকারিভাবে নথিভুক্ত মৃতের তালিকায় মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। নথিভুক্তদের মধ্যে ৩৬ হাজারের ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে কোভিড-১৯।

পরিসংখ্যানবিদরা যে পদ্ধতিতে গণনা করেন, সে অনুযায়ী ওই সময়ে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে পরিসংখ্যান তত্ত্বের হিসাবে আন্দাজ করা হয়েছে, তাতে এই সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকটা গণনা পদ্ধতিই সরকারি সংখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

সরকারি পরিসংখ্যান বিশ্বাসযোগ্য নয়?
প্রতিদিন যুক্তরাজ্যের সর্বত্র করোনাভাইরাসে মৃত্যুর যেসব খবর জানা যাচ্ছে সেগুলো তুলে ধরছে সরকারের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট ফর হেলথ অ্যান্ড সোসাল কেয়ার)।

এই পরিসংখ্যানই প্রতিদিন সরকারের ব্রিফিংয়ে পড়ে শোনানো হয়। আর এই পরিসংখ্যানই পাওয়া যায় মৃত্যুর তুলনামূলক চিত্র আন্তর্জাতিক যেসব সাইটে প্রকাশ করা হয় সেখানে।

কিন্তু এই তালিকায় শুধু সেইসব ব্যক্তির মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেয়া হচ্ছে যারা করোনাভাইরাস পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। যেসব বিজ্ঞানী মহামারির বিস্তার সঠিকভাবে নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে একটা প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করছেন তাদের জন্য এই পরিসংখ্যান অর্থবহ।

কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়াল স্ট্যাটিসটিকাল সোসাইটির সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক সিলভিয়া রিচার্ডসন বলছেন সংক্রমণ বৃদ্ধির হার এবং সংক্রমণের এই হার শীর্ষ পর্যায়ে বা চূড়ায় কতদিন থাকছে তা দেখার জন্য এই পদ্ধতি কার্যকর।

কিন্তু সার্বিকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা নির্ধারণের জন্য এই গণনা পদ্ধতি দুর্বল, কারণ যাদের কখনও পরীক্ষা করা হয়নি, কিন্তু কোভিডে মারা গেছে, তারা এই তালিকার বাইরেই থেকে যাচ্ছে।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যে কোভিড১৯-এর পরীক্ষা মূলত সীমিত রয়েছে হাসপাতালগুলোতে। কাজেই হাসপাতালের বাইরে যারা আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে যাদের পরীক্ষাই হয়নি তাদের একটা বড় সংখ্যা এই পরিসংখ্যানে আসেইনি।

এছাড়াও বিভিন্ন দেশে মৃত্যুর হিসাবের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংজ্ঞা ব্যবহার করা হচ্ছে।

যেমন, কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ইংল্যান্ডে হাসপাতালের বাইরে যাদের কোভিডে মৃত্যু হয়েছে তাদের সংখ্যা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছিল না। কিন্তু স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আর্য়াল্যান্ড তাদের অন্তর্ভুক্ত করছিল।

ওদিকে, বেলজিয়াম তাদের প্রতিদিনের পরিসংখ্যানে সন্দেহভাজন করোনা রোগীদেরও অন্তর্ভুক্ত করছে। ফলে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেলজিয়ামে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই বেশি।

আর একারণে দেশগুলোর মধ্যে তুলনা টানা খুবই কঠিন।

মাপকাঠির ভিত্তি একই না হওয়ায় এই তুলনা সমতার ভিত্তিতে হয় না। আর তাই বিজ্ঞানীরাও প্রতিদিনের পরিসংখ্যানে ছোটখাট পার্থক্যকে খুব বেশি গুরুত্ব না দেবার আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা বলছেন এর থেকে কোন উপসংহার খোঁজার চেষ্টা করাটা ভুল হবে।

যেহেতু প্রতিটি দেশের গণনা পদ্ধতি আলাদা, তাই পরিসংখ্যানবিদরা একটা সহজ সংজ্ঞার ভিত্তিতে হিসাব করার কথা বলছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here